Department of CSE, BUET

BSADD - BUET System Analysis, Design and Development community

  • Home
  • Gallery
  • Activities
  • B'Links
  • BSADD Blog
  • BSADD Connect
  • About
  • BSADD Blog

  • Safayar Ahmed '4
  • Java & Intershop developer at Eci Nederland B.V.

কথায় আছে, ডরাইলেই ডর


কিছুদিন আগে এক ছোট ভাই ধরেছে, নিজের চাকুরীর অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা লেখা। একজন জাত অলস মানুষ হিসেবে, এটা অনেক বিশাল এক দায়িত্ব আমার জন্য। তাই আমার যা স্বভাব, সেই অনুযায়ী পিছলাইতে থাকলাম। কিন্তু বুঝতে পারি নাই, ছোটভাই হাতভর্তি ছাই নিয়ে আমাকে ধরেছে। পরে মনে হল, আরে এটাও তো বিশাল এক গুন আধুনিক সমাজে। যেটা ঠিক করা, সেটার জন্য নিরলস কাজ করে যাওয়া। তাই, বসে গেলাম কিছু একটা লিখতে।

একজন বাংলাদেশি হিসেবে, বিনামূল্যে পরামর্শ দেয়ার অভিজ্ঞতা এবং বুয়েট থেকে মোটামুটি মানের এক রেজাল্ট করে কামলা খাটা ছাড়া, তেমন কোন কোয়ালিফিকেশন নাই। কিন্তু ২০০৯ থেকে দেশ-বিদেশের ৩-৪ ভিন্ন কোম্পানীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে, কি করা উচিত নয়, সেটা সম্পর্কে কিছু বলতে পারি। আমরা সবাই বিশাল বিশাল সব স্বপ্ন নিয়ে ভার্সিটিতে ক্লাশ শুরু করি। আমি তো ভেবেছিলাম, টিচার ফাইট দেয়া ছাড়া অন্য কিছু না আর। টিচার হব, বাহিরে পিএইচডি করব, আরো কত হেনতেন। কিন্তু বুয়েটের পাষাণ হৃদয় স্যারেরা, লেভেল-১ টার্ম-১ সব স্বপ্নের বেলুন টুস করে ফাটায়া দিয়েছেন। “কি অর্থ এ জীবনের” টাইপ চেহারা নিয়ে যখন হলে ঘুরছিলাম, বুয়েটের যুদ্ধাহত বড়ভাইরা বলেছিল -

শোন ছেলে, এই সিজিপিএ ধুয়ে কি পানি খাবা, কাজ কর, কোডিং কর, সেটা কাজে দিবে।
মাথা নিচু করে শুনতাম, আর মনে মনে বলতাম, কিছু করতে তো পারেন নি, এখন আমারে লেকচার দেন। আজ তাদের কথা বুঝতে পারি কিছু কিছু। ৭ বছরের চাকুরী জীবনে, এই রেজাল্ট নিয়ে কোন কথা শুনি নি, আর এখন তো কেউ আর কোন ভার্সিটি থেকে পাশ করেছি, রেজাল্ট কি, কিছুই জিজ্ঞেস করে না। কিন্তু কাজ নিয়ে কথা শুনেছি, কোড কোয়ালিটি নিয়ে কথা শুনেছি, নিজের কমিউনিকেশন স্কিল নিয়ে কথা শুনেছি।

অনেকে বলে, ৪-৫ বছর বুয়েটে পড়ে কিছুই শিখি নি, যা শিখেছি জবে গিয়ে। আবার অনেকে বলে, বুয়েটেই সব শিখেছি। দুটোই আংশিক সত্যি। বুয়েটে নিজেরটা নিজে করে নিতে হয়। মনে হয় বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই রকম। আমরা অনেকেই সিজিপিএ দৌড়ে, নিজের অন্য স্কিলের কথা ভুলে যাই। যদি সিজিপিএ ভাল হয়, বাহিরে পড়তে চলে যাওয়া হয়, তাহলে অন্য কথা। কিন্তু যদি জবে যেতে হয়, তাহলে একটা ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। জবে গিয়ে আমার মনে হয়েছে, আমার আরো অনেক সময় দেওয়া দরকার ছিল প্রোগ্রামিং-এ। কোন প্রতিযোগিতার জন্য নয়, নিজের জন্য। Project Euler , Hackerrank এরকম কত সাইট আছে, নিজের কোডিং স্কিলের জন্য। গিটহাবে কত ওপেন প্রজেক্টে কন্ট্রিবিউট করা যায়। আমি নিশ্চিত, সবাই এখন এসব ব্যাপারে অনেক সিরিয়াস, আর তারা অনেক কাজ করে। কোন কিছুর বিনিময়েই কোডিং প্রাক্টিসে ছাড় দেয়া উচিত নয়।

একবার একটা কমিকে দেখেছিলাম,

এমন ভাবে কোডিং করতে হবে, যেন তোমার কোড রিভিউ করবে কোন সাইকোপ্যাথ কিলার।
কথাটা খুব সত্য। বাচ্চাকালের নিজের কিছু কোড দেখে, আমার নিজেই নিজেকে মারতে ইচ্ছে করে। কোড কোয়ালিটি একদিনে তৈরি হয় না। আমি যদি আশা করি, কোয়ালিটি কোড, ক্লিন কোড নিয়ে পড়াশোনা না করে, প্রাক্টিস না করে, জবে গিয়েই আমি একেবারে মিলিয়ন ডলার প্রোগ্রাম লিখবো, তাহলে আমি কোনদিনই ভাল প্রোগ্রাম লিখতে পারবো না। এ বিষয়ে, সিনিয়রদের ফলো করে অনেক কিছু শেখা যায়। অনেকে ভাবের জন্য, কিনবা নিজে জানে না, এটা বুঝতে না দেয়ার জন্য, প্রশ্ন করতে চায় না। এটা জবের প্রথম দিনেই ঝেড়ে ফেলা উচিত। আর এখানে চলে আসে, কমিউনিকেশন স্কিলের কথা।

আমরা অনেকেই, বন্ধুর আড্ডায় যত সপ্রতিভ, জবে গিয়ে ততখানি না। ইংরেজি শুধু না, অনেকেই বাংলাতেও কথা বলতে আগ্রহী না। মনে করে, মাথা নিচু করে, ভাল কাজ করলেই হবে। এটা একটা বড় ভুল ধারনা। শুধু অফিশিয়াল ব্যাপারে না, নরমাল কথাতেও নেটওয়ার্কিং করা যায়, যেমন বড় ভাইয়ের সাথে চা-বিড়ি বা অফিস পার্টিতে এক সাথে বাফেটে কোপ দিয়ে হোক। জীবন ফুলের বিছানা নয়, সেটা জবের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অনেক কনফ্লিক্ট হবে, এটা মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে সেই কনফ্লিক্ট ম্যানেজ করে। আমি আমার প্রফেশনাল লাইফের প্রথম দিকে, অনেক মাথা গরম করেছি। আজ বুঝতে পারি, মাথা গরম করে আমি কিছু লাভ করিনি। কিন্তু আমি যদি মাথা গরম না করে, চেষ্টা করতাম ম্যানেজ করার, আমি অনেক কিছু শিখতাম।

সব কথার শেষ কথা, নিজেরটা নিজেরই ঠিক করতে হবে। পেপারে-অনলাইনে অনেক মোটিভেশনাল কথা-বার্তা থাকে। সবকিছুই একজনকে ফিট করবে, এটা ভুল। নিজের লক্ষ্য ঠিক থাকলে, নিজের ইচ্ছে-চেষ্টা থাকলে, জব লাইফও অনেক সহজ। আমি যদি টিকে থাকতে পারি, দেশে-বিদেশে কাজ করতে পারি, তাহলে সবাই একটু চেষ্টা করলেই পারবে। কথায় আছে, ডরাইলেই ডর। সেরকম আরকি।


  • Comments
  • Go to all blogs