Dr. Moushumi Sharmin completed her graduation from CSE, BUET in 2003. She completed her MS from Marquette University in 2006 and subsequently her Ph.D. in computer science from UIUC (University of Illinois at Urbana-Champaign). She is currently working as an associate professor at Western Washington University. Before this, she was a research assistant professor at the University of Memphis. She did her research internship at IBM T J Watson Research Lab. She was awarded the prestigious Saburo Muroga Fellowship for her first year in UIUC.
Nafisa Anzum graduated from the Department of CSE, BUET in 2015. She is currently doing her Master of Mathematics (MMath) under the supervision of Prof. Semih Salihoglu in the David R. Cheriton School of Computer Science at the University of Waterloo. Prior to this, she worked as a software engineer for about two years at iPay Systems Limited in Bangladesh. Her research interests lie in data processing systems, data science, and machine learning.
মুশফিক : সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি BSADD Women in Tech Episode 04 এ। আজকে আমাদের সাথে নিয়ে এসেছি দুইজন সিনিয়র আপুকে। মৌসুমি আপু এবং নাফিসা আপু। তাদের একজন ইতোমধ্যে Ph.D. করে ফেলেছেন এবং আরেকজন বর্তমানে প্রসেসিং এ আছেন। আজকে আশা করছি আমরা তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু জানতে পারবো। শুরু করছি মৌসুমি আপুকে দিয়ে। আপনি যদি নিজের সম্পর্কে কিছু বলতেন।
মৌসুমি : ধন্যবাদ আমাকে আজকে আমন্ত্রণ করার জন্য। আমি Buet CSE ‘96 ব্যাচ। আমি আসলে যখন বুয়েটে ছিলাম তখন প্রথমদিকে মনে হতো এত পড়ালেখা করা লাগবে না এবং প্রথমে তেমন পড়ালেখাও করিনাই। কিন্তু পরে গিয়ে মনে হলো না আমি Higher Studies এর জন্য বাইরে যেতে চাই। আমি যখন পাশ করেছি, ২০০৩ তে আমরা বের হই, তখন আমার কোন ধারণাই ছিল না বাচেলর থেকে সরাসরি পিএইচডি তে অ্যাপ্লাই করা যায়। তো মাস্টার্সের জন্যই অ্যাপ্লাই করি Marquette University তে। মাস্টার্স পড়ার সময় থেকেই আমার একটা ধারণা আসে যে পিএইচডি করতে হবে এবং আমি খুব ভাল স্কুলে যেতে চাই। তো আমি Urbana-Champaign এ যাই, ওখান থেকে পিএইচডি করি। Urbana-Champaign থেকে বের হয়েছি ২০১৩ তে। এরপর দুই বছর University of Memphis এ রিসার্চ এসিসটেন্ট হিসেবে কাজ করেছি। এখন Western Washington University তে আছি Assistant Professor হিসেবে।
মুশফিক : ধন্যবাদ আপু। এবার শুনতে চাই নাফিসা আপুর কাছ থেকে।
নাফিসা : ধন্যবাদ মুশফিক এবং কংগ্র্যাচুলেশন্স মৌসুমি আপু! আমি ২০১০ ব্যাচ, ২০১৬ এ বুয়েট থেকে বের হই। iPay Systems Limited এ দুবছর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে জব করি। Kind of my best years in job life! iPay Systems কে খুব মিস করি এখনো। তারপরে অ্যাপ্লাই করি মূলত মাস্টার্সের জন্যই কারণ ঐরকম শিওর ছিলাম না যে পিএইচডি টা কোন সাবজেক্টের উপর করতে চাই। লাকিলি আমার প্রফেসর আমাকে খুঁজে বের করে, তা না হলে হয়তো এডমিশনটা হতো না। তারপর University of Waterloo তে জয়েন করলাম। Prof. Semih Salihoglu এর সাথে কাজ করলাম। এইতো ডেটাবেস ফিল্ডটা বেশ পছন্দ হয়ে গেলো। এরপর লাস্ট ইয়ার পিএইচডির জন্য এপ্লাই করেছিলাম। আগে মাস্টার্সটা শেষ করতে চাই, আগস্টে মাস্টার্স শেষ হলে সেপ্টেম্বর থেকে পিএইচডি শুরু হবে।
মুশফিক : আপনাদের দুইজনকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে জয়েন করার জন্য। আজকে আমাদের আলোচনার মূল যেই বিষয়বস্তু সেটা হচ্ছে আমাদের যেই পিএইচডি লাইফ বা এডমিশন লাইফ মানে বিদেশে যেই লাইফটা মানুষ স্পেন্ড করে সেখানে মানুষ কিরকম মেন্টাল প্রেশার বা ডিপ্রেশব ফেইস করে। পিএইচডি তো অনেক লম্বা একটা সময়, পাঁচ বছর বা সাত বছর, তো এই টাইমে কেউ যদি বোধ করে যে না আমার কাজ ঠিকভাবে হচ্ছে না বা যেকোন কারনে যদি মেন্টালি ডিপ্রেসড বোধ করে তবে সে কিভাবে সেখান থেকে বের করতে পারে। যেহেতু মৌসুমি আপু এটা নিয়ে অনেক কাজ করেছেন আমরা একটু জানতে চাব কিভাবে এই পরিস্থিতি গুলো তৈরি হয় বা কিভাবে আমরা এগুলো থেকে বের হতে পারব।
মৌসুমি : আমার কাছে মনে হয় এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা টপিক কারণ পিএইচডি করছে কিন্তু কখনোই ডিপ্রেসড হয়নি, এটা আমার কাছে মনে হয় খুব রেয়ার। কারণ প্রথমত যখন আমরা পিএইচডি করছি এটা তো ডিফারেন্ট, তাই না? মানে ব্যাচেলর এ তোমার বই আছে রিসোর্স ম্যাটেরিয়াল আছে সেগুলো যদি তুমি পড় তবে ভাল করতে পারবে। মাস্টার্সে যাওয়ার পর সেটা আরেকটু কমপ্লিকেটেড হয় কিন্তু তবুও তোমার একটা গাইডলাইন আছে, তোমার এডভাইসর বলে দিতে পারবে, অন্য স্টুডেন্ট রা বলে দিতে পারবে যে এই সাবজেক্টে আমি স্ট্রাগল করছি আমি কিভাবে ভাল করবো। কিন্তু পিএইচডি তে তুমি একটা ভালো এরিয়া নিয়ে কাজ করে মানে হচ্ছে তুমি কমপ্লিটলি একটা নতুন টপিক নিয়ে কাজ করছো। যেই টপিকের তুমিই ওয়ার্ল্ডের লিডিং এক্সপার্ট হবে। এটাই তো তোমার পিএইচডি, তাই না? টপিকটা বড় হতে পারে ছোট হতে পারে কিন্তু তোমার এডভাইসরও তো অত ভাল জানবে না যেহেতু টপিকটা নতুন এবং আনসার্টেইন। যে তোমার চেয়ে ভাল জানবে এটা তো আসলে তার পিএইচডি, তোমার না। তো এক্ষেত্রে এটা খুবই স্বাভাবিক যে আমরা ডিপ্রেসড হয়ে যাবো। আমরা পিএইচডির রিসার্চ তো করি এজন্য যে আমরা সেটা পাবলিশ করবো এবং বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির এগুলো নিয়ে আলাদা নিয়মকানুনও আছে। যেমন Urbana-Champaign এর কথাই বলি আমি যেহেতু ওখান থেকে পিএইচডি করেছি। ঐখানে একটা ব্যাপার ছিল যে তিনটা টপ পাবলিকেশন লাগবে। টপ মানে একদম টপ টিয়ার এর পাবলিকেশন। টপ টিয়ারের পাবলিকেশন করা খুবই খুবই খুবই টাফ। কিন্তু এটা তুমি যদি তিনটা না করতে পারো তুমি বের হতে পারবে না। আর পাবলিকেশন এরও তো গ্যারান্টি নেই। অনেকসময় খুব ভাল কাজও পাব্লিশ হয় না। অনেক সময় আইডিয়া আসতে অনেক সময় লাগে। আবার হয়তো তোমার আইডিয়া আছে তুমি সবকিছু রেডি করেছো কিন্তু তোমার ইমপ্লিমেন্টেশন টা কোন কারনে হচ্ছে না। তো এরকম অনেক ব্যাপার আছে, তোমার কাজ আগাচ্ছে না কিন্তু বাকিদের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে, আবার একই জিনিস নিয়ে বেশিদিন কাজ করা সেটাও মানুষকে ডিপ্রেসড করে ফেলতে পারে। তো এটা ধরেই নিতে হবে যে আমি পিএইচডি করতে গেলে আমার লাইফে কখনো না কখনো ডিপ্রেশন আসবেই। এবং এডভাইসর যদি সাপোর্টিভ না হয় সেটাও বিশাল বড় একটা চ্যালেঞ্জ। আমার এডভাইসরের কথা যদি বলি উনি খুবই ভাল মানুষ তবে উনার কমিউনিকেশন স্কিল টা হয়তো আরেকটু ভাল হতে পারতো। মানে ডিপ্রেশন কিন্তু হবে, হতেই পারে, কিন্তু একটা ভাল সাপোর্ট থাকা খুবই দরকার। মানে যদি কিছু হয় এরকম মানুষ যেন থাকে যাদেরকে আমি খুলে বলতে পারবো ব্যাপারটা এবং যারা জাজ করে বসবে না। তোমার সাথে কাজ করে এমন মানুষ যেমন তোমার ফ্রেন্ড হবে, তোমার এরিয়ার বাইরে কাজ করে এমন মানুষও তোমার ফ্রেন্ড হবে। যখন মন খারাপ হবে তখন নিজেকে পুশ করার চেয়ে, মানে আমি ব্যাপারটা কে পাত্তা দিবো না বা সবাইই তো পারে আমিও পারবো এরকম করার চাইতে কথা বলা বেটার। এরকম সময়ে হয়তো আমি একসপ্তাহ কাজ করতে পারছি না সেটাও এমনকি ঠিকাছে। কারণ এত বড় একটা জার্নিতে, এতগুলা বছরের মধ্যে একসপ্তাহ কিন্তু কিছুই না। বরঞ্চ এই সময়টুকু নিলে পরবর্তীতে আমার কাজটকা বেটার হবে।
মুনতাকা : ধন্যবাদ আপুকে। এডভাইসরের ব্যাপারটা বোধহয় আসলেই অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং এটা আসলেই অনেকটা মানুষের ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। নাফিসা আপু মেন্টাল ব্রেকডাউন কিভাবে সামলাতে হয় সেটা নিয়ে যদি বলতেন আমাদের।
নাফিসা : মৌসুমি আপুর কথাগুলার সাথে আমি একশো ভাগ সহমত। মেন্টাল ব্রেকডাউনের ব্যাপারটা আসলে এখানে অনেক Peer pressure কাজ করে। কেউ হয়তো ভাল ভাল কাজ পাবলিশ করছে আমি পারছি না এটাও অনেক প্রেশার হিসেবে কাজ করে। আবার অনেক সময় দেখা কোনকারণ ছাড়াই , কোন ট্রমা নাই বা কিছু নাই কিন্তু তার ভাল লাগছে না। বিদেশে আসলে ব্যাপারগুলা সামলানো অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়ায় কারণ দেশে যেমন আমরা অনেক মানুষের সংস্পর্শে থাকি এখানে এসে আমরা অনেক একা হয়ে পরি। সাথে তো অন্যান্য প্রেশার আছেই, বিশেষ করে যারা পিএইচডি করেন তারা। সেক্ষেত্রে আমার মতামত হচ্ছে ব্যাপারটা যদি মেন্টাল ব্রেকডাউন পর্যন্ত যায়ই তাহলে নিজেকে একটু সময় দাও, একটু রেস্ট নাও। আসলে একটা পাঁচ বা ছয় বছরের পিএইচডিতে একটা সেমিস্টার কোন ব্যাপার না। যদি মাস্টার্সে গিয়েও এরকম মনে হয় সেটাও ঠিকাছে, হতেই পারে। নিজে ভাল থাকাটা আসলে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সবার জীবন অবশ্যই একইরকম হবে না। হয়তো আমার ল্যাবমেট একটার পর একটা পাবকিকেশন করেই যাচ্ছে বা আমার প্রফেসর খুবই ডিমান্ডিং, একদমই বুঝতে চায় না, কিন্তু তুমি ডিপ্রেসড বা শারিরীকভাবে দূর্বল অনুভব করছো, তাহলে ব্যাপারটা প্রকাশ করা ভাল। হয়তো আমি একটু ব্রেক নিলে আমি লেট হয়ে যাবো কিন্তু আমি ব্যাপারটা মেকাপ করে নিবো। জীবনটা তো কোন প্রতিযোগিতা না, সবার জীবনই আলাদা। নিজের গতিটা নিজে বুঝে নিয়ে সেভাবে আগাতে হবে। বাইরে এসে কিন্তু প্রফেশনাল হেল্প চাওয়া টা খুবই জরুরী। এমনকি কোন কাউন্সেলর এর সাথে ম্যাচ না করলে আরেকজনকে ট্রাই করো। সবসময় নিজের মেন্টাল হেলথ টা কে গুরুত্ব দেওয়াটা বেশি জরুরী। Be kind to yourself !
মুনতাকা : নাফিসা আপু তো দেশে এবং বিদেশের মাঝে যে মেন্টাল হেলথ এর পার্থক্য সেটা বললেন। মৌসুমি আপুকে জিগেশ করছি যে দেখে থাকাকালীন তো আমাদের ফ্যামিলি থাকে আমাদের সাথে তখন ব্যাপারতা একভাবে নেই আমরা। বিদেশে যখন একা হয়ে যাবো, হয়তো দিনরাতের পার্থক্য বা অন্য কোন কারণে কাউকে পাচ্ছি না, তখন কি করা উচিত?
মৌসুমি : বাইরে তো পরিবেশ বা লাইফস্টাইল দুইটাই আলাদা। এখানে আমাদের মত ঐ ব্যাপারগুলাও নাই যে আত্মীয়স্বজন একসাথে থাকবে, এখানে মানুষের চিন্তাভাবনাও আলাদা। ওরা যেভাবে চিন্তা করে আমরা তো সেইভাবে চিন্তা করি না, তো এটা একটা শক। বাইরে আসলে সবাই প্রথমেই এই অভিজ্ঞতা টা অর্জন করে। আমি এটা শিখেছি আমার সাথে একটা অ্যামেরিকান মেয়ে পিএইচডি করতো ওর থেকে, ও নিজেও এখন প্রফেসর। তো আমি একটা ছোট একটা ঘটনা বলি। আমরা একবার কনফারেন্সের কাজে এক জায়গায় গিয়েছিলাম । আসার পথে এখন কিভাবে কি ফ্লাইটের টাইমটা প্রোডাক্টিভ করা যায়, আমি একটা পেপার নিয়ে পড়া শুরু করলাম। আর ও পুরা ফ্লাইট ঘুমালো। তো আমরা যখন ল্যান্ড করলাম তখন কথা হলো কি করলাম আমরা ফ্লাইটজুড়ে, আমি বললাম আমি তো সময়টা অনেক প্রোডাক্টিভ ভাবে কাটিয়েছি, আমি পেপার পড়েছি। তখন ও বললো হ্যাঁ আমিও সময়টা প্রোডাক্টিভভাবে স্পেন্ড করেছি, আমি ঘুমিয়েছি। তখন আমি ব্যাপারটা রিয়েলাইজ করলাম যে এইযে রেস্ট নেওয়া এটাও একটা কাজ, একটা প্রোডাক্টিভিটি। বিশেষ করে আমরা যখন একা থাকি তখন নিজেদের যত্ন নেওয়া নিজেকে প্যাম্পার করা এরকম প্রয়োজন। যেমন আমি এখন ৫ লাইন কোড লাইন লিখেছি, নিজেকে এক কাপ কফি বানিয়ে দিলাম, এরকম। নিজের সাফল্য গুলোকে এপ্রিশিয়েট করা এটাও জরুরী। নাফিসা যেটা বললো কাউন্সেলরের হেল্প নেওয়া উচিত এবং বাইরে আসলে যেটা অবশ্যই করা উচিত সেটা হচ্ছে আমাদের সাথে যারা আছে তাদের সাথে খুব ক্লোজ না হলেও একটা ফ্রেন্ডশিপ তৈরি করা। কাজটা অবশ্যই ডিফিকাল্ট, কিন্তু ব্যাপারটা নিয়ে ওপেন থাকা উচিত। দেশে হয়তো চাইলেই আমরা টিএসসি চলে গেলাম, এককাপ চা খেতে পারতাম, তাহলে এখানে আমাকে বের করতে হবে আমার লোকাল এরিয়ার মধ্যে কোন জায়গাটা আছে যেখানে মন খারাপ হলে যেতে পারি সে জায়গাগুলো আইডেন্টিফাই করে রাখা। এবং এরকম জায়গাগুলার বা যে কাজগুলো করলে মন ভাল হয় সেগুলোর মোটামুটি একটা লিস্ট রাখা। যখনই নিজের মনে হবে আমি বোধহয় বেশি একটানা কাজ করে ফেলছি, আমার একটা ব্রেক দরকার, তখন এসব জায়গায় যাওয়া বা এই কাজগুলো করা। নিজেকে ইম্পরট্যান্স দিয়ে এভাবে কাজ করলে তবেই এইটা বেস্ট হবে। পড়ালেখার বাইরে একটা এমন কিছু খুঁজে বের করা যেটা তোমার কাজের সাথে কোন সম্পর্কই নাই, সেটা করা। ঐটা হলো অনেকটা আমাদের সেফ স্পেসের মতো। আমার ক্ষেত্রে এরকম তিনটা জিনিস কাজ করে। আমি খুব বেশি স্ট্রেসড হয়ে গেলে গান শুনি, মুভি দেখি অথবা রান্না করি।
মুশফিক : ভেরি ইন্টারেস্টিং আপু। নাফিসা আপু আপনি যদি এখানে কিছু এড করতে চান। কিভাবে আমরা একা থাকার ব্যাপারটাতে অভ্যস্ত হবো। কারণ আমরা তো আসলে একা থাকি না। দেশে তো সমসময় ফ্যামিলির সাথেই থাকি।
নাফিসা : মৌসুমি আপু যেটা বললেন যে এখানে একটা সার্কেল তৈরি করা দরকার, আমি যদিও এখনো সেটা পারি নাই আনফর্চুনেটলি। তবে আশেপাশে কিছু বাংলাদেশি আছেন যারা আমাকে সাপোর্ট দেন। আপু আরেকটা যেটা বললেন রিসার্চের বাইরে কিছু একটা করা, একটা সেফ স্পেস। এটা আমাকেও খুব হেল্প করে, এটা আসলে যেকোন কিছুই কিন্তু হতে পারে। আমি রিসেন্টলি স্কেচিং এন্ড পেইন্টিং করা শুরু করেছি এবং ইনডোর প্ল্যান্টস ও অনেক পছন্দ, গাছপালা কিনে বাসা ভরে ফেলসি। অথবা কেউ যদি পেট পছন্দ করে সেটাও রাখতে পারে। নিজেকে রিওয়ার্ড দেওয়াটাও কিন্তু প্রচন্ড ইম্পর্ট্যান্ট।
মুশফিক : নাফিসা আপুর কথা থেকে আমার যেটা সবচেয়ে ভয় লাগে যে আমি যদি বিদেশে যাই এবং আমি যদি বন্ধু বানাতে না পারি। কারণ আমি আসলে একা থাকতে পারি না। ওখানে হয়তো বিভিন্ন রকমের বা বিভিন্ন দেশের মানুষজন থাকবে যাদের সাথে নর্মালি কথা বলাটাও হয়তো ডিফিকাল্ট। এরকম প্রব্লেম যদি উদ্ভূত হয় তাহলে আমরা কি করবো? মৌসুমি আপু প্রথমে বলুন।
মৌসুমি : এটা আমি যেটা করি। আসলে হয়তো বোঝা যায় না, আমি জিনিসটা ফেক করতে পারি অনেক ভাল হয়তো (হাসি), যে আমি মানুষের সাথে খুব ভাল মিশতে পারি, আসলে কিন্তু পারি না। এটার জন্য একটা ক্লাব, অর্গানাইযেশন, সোসাইটির সাথে যুক্ত হয়ে যাই। প্রফেশনালিও ইম্পরট্যান্ট আবার প্রপার মেন্টাল সাপোর্টের জন্যও ইম্পরট্যান্ট। বাংলাদেশে তো সব কিছু ঢাকা কেন্দ্রিক, কিন্তু এখানে তো অনেক স্টেট থেকেও ছেলেমেয়েরা আসে। তো ওরাও না সেম জিনিসটার ভিতর দিইয়ে যায়। সেক্ষেত্রে একটা ক্লাব জয়েন করলে ব্যাপারটা অনেক হেল্প পাওা যায়। ক্লাব বলতে আমি বুঝিয়েছি যে প্রত্যেকটা ইউনিভার্সিটিতেই ACM এর একটা ব্রাঞ্চ থাকবে, Student Chapter থাকবে, IEEE থাকবে, তুমি যে রিসার্চ এরিয়া তে কাজ করো যেমন রোবটিক্স ক্লাব থাকতে পারে, এই ক্লাবগুলো তে ইনভল্ভড হয়ে যাওয়া, এটলিস্ট এটেন্ড করা। সেখানে গেলে তোমার যেই ইন্টারেস্ট সেরকম কমন ইন্টারেস্টের মানুষ পাওয়া যাবে। নাফিসা যেটা বললো আমাদের ফ্রেন্ডশিপের ক্ষেত্রে একটা ব্যারিয়ার তো হচ্ছে ইন্ট্রোভার্ট এক্সট্রোভার্ট, কিন্তু এটাই একমাত্র ব্যারিয়ার না। যেমন ওদের যেকোন সেলিব্রেশনেই প্রচুর এলকোহল কন্সাম্পশন হয়, ঐটা ওদের কাছে এক্সেপ্টেড হলেও হয়তো আমরা হেসিটেত ফিল করি সাভাবিকভাবেই। আমরা অনেককিছুই হয়তো মিসয়াউট করি আবার একটা কালচারাল ব্যারিয়ার তো আছেই। এখন যদিও কালচারাল ব্যারিয়ার টা কম, দেশি বিদেশি সবাই একইরকম শো দেখছে, কালচারগুলা এখন খুবই ওপেন। তারপরও আমি অনেকসময় আমার স্টুডেন্ট দের কিছু পপ কালচার রেফারেন্স হয়তো বুঝতে পারি না। তুমি যদি কারো কথা না বুঝো তাহলে কিন্তু কমিউনিকেট করাটা অনেক কঠিন হয়ে যাবে। আরেকটা জিনিস যেটা দরকার সেটা হচ্ছে ভলান্টিয়ার এক্টিভিটি করা। আমাদের দেশে এখন জিনিসটা তাও হচ্ছে। তুমি হয়তো একটা হোমলেস শেল্টারে কাজ করলা, একটা কিচেনে কাজ করলা। কিছু একটাতে ইনভল্ভ হওয়া, এটা তোমাকে তোমার লোনলিনেস কাটাতে সাহায্য করবে।
মুনতাকা : থ্যাঙ্ক ইউ মৌসুমি আপু। নাফিসা আপু ফ্রেন্ড সার্কেলের এই ব্যাপারগুলো নিয়ে একটু বলবেন।
নাফিসা : এরকম সমস্যা আমিও প্রথমে ফেস করেছি। আমাদের ডেটা সিস্টেমের তো আসলে মানুষও অনেক বেশি, আমি হয়তো অর্ধেক মানুষকেও চিনি না, কোনদিন কথাও হয়নি। আমার যখন মনে হয় যে আমি অনেক একা হয়ে যাচ্ছি, তখন নিজের কম্ফোর্ট জোনের বাইরে গিয়ে হয়তো কারো কথা বলতাম। কেউ হয়তো ডাইনিং এ কফি খাচ্ছে আমি গিয়ে নিজেকে ইন্ট্রোডিউস করে কথা বলা শুরু করতাম। কয়েকদিন যোগাযোগের পর হয়তো তার ডেস্কে গিয়ে তার সাথে কথা বলছি বা তার সাথে কফি খেতে যাচ্ছি, এরকম। নিজের কম্ফোর্ট জোন থেকে বের হয়েও এরকম ফ্রেন্ডশিপ করা যেতে পাড়ে। এখন তো কোভিড সিচুয়েশন, কেউ কারো বাসায় যাচ্ছেনা বা গ্যাদারিং গুলা হচ্ছে না। আগে হয়তো রান্নাবান্না করলে সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হতো, বাংলাদেশী কিছু যেমন একদিন মোরগ পোলাও রেধে কয়েকজনকে দাওয়াত দিয়েছিলাম তারমধ্যে একজন ঝালের জন্য খেতে পারেনি (হাসি)। তার সাথে যে আমার খুব ভাল খাতির এরকমটা না তবু আমি তাকে জানার জন্য, বন্ধুত্ব করার জন্যেই তাকে দাওয়াত দিয়েছিলাম। তারপর থেকে আমরা ভাল বন্ধু হয়ে যাই। এরকম ক্লোজনেস আসতে হয়তো টাইম লাগে। দুইদিক থেকেই একপা একপা করে আগাতে হয় এসব বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে। ক্লাবে জয়েন করাটা এক্ষেত্রে খুব ভাল কাজে দেয়। কালচার ডিফারেন্স ছাড়া মানুষজন সাধারণত খুব ফ্রেন্ডলি। আর এল্কোহল কন্সাম্পশন বা সবকিছু বারে ফিয়ে সেলেব্রেট করার ব্যাপারটা একটু ঝামেলার। আই থিঙ্ক এটেন্ড করাটা ইম্পর্ট্যান্ট, আমিও হয়তো গিয়ে বসে থাকি, এল্কোহল নেই না বা ভেজিটেবল জাতীয় কিছু খেয়ে চলে আসি। কিন্তু এটেন্ড না করলে হয়তো লেফটয়াউট ফিল করবো।
মুনতাকা : আপু তাহলে আরেকটা ব্যাপারে এখন একটু প্রশ্ন করি। পিএইচডি করার সময় একজন স্টুডেন্টের তার সুপারভাইজারের সাথে সম্পর্কটা কিরকম হওয়া উচিত?
নাফিসা যদিও আমি মাস্টার্স তবু আমার প্রফেসর আমাকে পিএইচডি স্টুডেন্ট হিসেবেই কন্সিডার করেন। সেহিসেবে বলি, সুপারভাইজারের সাথে সম্পর্ক ভাল থাকাটা খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। এমনকি কেউ যখন এপ্লাই করে তখনও তাকে আমি বলি ভাল সুপারভাইজার পাওয়াটা জরুরি। এই সময়টা অনেক চ্যালেঞ্জিং, এই পুরোটা সময় নিজের স্যানিটি ধরে রাখা খুব কঠিন যদি সুপারভাইজার আন্ডারস্ট্যান্ডিং না হয়। ফার্স্ট ইয়ারে যেরকম আমি প্রত্যেকটা মিটিং শেষ করে এসে কান্না করতাম, আমার প্রফেসর খুব ডিমান্ডিং, সে সবকিছু পার্ফেক্ট চায়। হয়তো তার পয়েন্টও ঠিক আছে, হুইচ আই গেট নাও। আবার আমি কথা কিভাবে বলছি, কিভাবে একটা সেন্টেন্স স্টাকচার করছি সেগুলা নিয়েও সে খুব জাজমেন্টাল ছিল। যা না নাফিসা তোমাকে কথাটা এভাবেই বলতে হবে। তখন আমার খুব প্রেশার ফিল হতো। তবে এক বছর পরে যখন তার সাথে প্রব্লেমস শেয়ার করা শুরু করেছি, তাকে আমার সমস্যা গুলো বুঝিয়ে বলেছি, যে তুমি যে এভাবে বলো ব্যাপারটা আমার খুব রুড লাগে, তখন থেকে সে ঠিকই ব্যাপারগুলা বুঝতে শুরু করে এবং আমার মেন্টাল হেলথ নিয়েও অনেক সাপোর্ট দেয় সে আমাকে। এরমানে যদিও এই না যে সে আমাকে পুশ কম করে, সে এখনো পার্ফেকশন চায়, হুইচ আই এপ্রেশিয়েট, সে সবসময় আমাকে অন টপ অফ মাই গেম থাকার জন্য উৎসাহিত করে। এটা স্ট্রেস্ফুল হলেও আমি মনে করি আমাদের রিলেশনশিপটা বেটার এখন। তবে আরেকটা জিনিস আমি ফিল করেছি এখানেও একটা লিমিট থাকাটা জরুরি। সবকিছু হুটহাট করে বলে ফেললাম এটা ঠিক না।
মুশফিক : আপু এক্ষেত্রে আমার একটা ভয় কাজ করে যে আমি পিএইচডি করতে গেলাম আমার যদি একটা ভাল রেজাল্ট না আসে?
নাফিসা : এই ব্যাপারটা আসলে একটু ডিফিকাল্ট। আমার প্রফেসরের সাথে এইটা বিয়ে গত বছর আমার কথা হয়েছিল। আমি বলতসিলাম যে সবাই ভাল ভাল কাজ করেছে আমি তো করতে পারিনাই। তখন সে আমাকে বললো যে ইউ আর জাস্ট স্টারটিং, এখন তুমি কিছু এক্সপেরিমেন্ট করবে, ফেইল করবে, দ্যাটস ওকে। এটা একটা প্রসেস। এরকম না যে কেউ ফার্স্ট ইয়ারেই এসে অনেক সাক্সেস্ফুল হয়ে গেলো এখন আমাকেও হতে হবে। এমনও হয়ে যে সিস্টেম বিল্ড করতেই আমাদের দুই বছর লেগে গেছে। মনে হতে পাড়ে যে ইটস নট ওর্থ ইট বা আরো কাজ করতে হবে। তো মেন্টাল হেলথটা ভাল রাখাটা অনেক ইম্পর্ট্যান্ট। মানুষজন কে কতটা পাবলিশ করে ফেললো এটা জরুরি না। এট দ্য ইন্ড অফ দ্য ডে তুমি একটা ভাল কাজ পাবলিশ করবা, এই বিশ্বাস রাখাটা জরুরি। যেমন আমাদের ল্যাবে এখন একজন নতুন ফ্যাকাল্টি জয়েন করেছেন। উনি খুব ইয়াং এবং খুবই নতুন। কিন্তু উনার পিএইচডি লাইফে মাত্র দুইটা পেপার ছিল। আমার প্রফেসর আমাকে বলছিল তারা অনেক অনেক এপ্লকেশন পেয়েছিল যাদের প্রচুর পেপার ছিল কিন্তু এই ভদ্রলোক্কে দেখার পর তাদের আর কোন সন্দেহ ছিল না যে হি ইস দ্য রাইত পার্সন। এটাই হতে হবে। যদিও তার মাত্র দুইটা পেপার ছিল কিন্তু দোস টু ওয়ার এনাফ। সবসময় হয়তো এরকম হয়না, কিছু ইউনিভার্সিটিতে তোমার তিন চারটা পেপার থাকতে হবে এরকম হয় কিন্তু তুমি যদি মন দিইয়ে কাজ করো রাস্তায় কিছু বাম্পস থাকবেই, বাট দ্যাটস ওকে। তোমাকে কন্টিনিউ করে যেতে হবে, গিভ আপ করা যাবে না। আমার প্রফেসর আমাকে বলতেন তার ফার্স্ট পেপার পাবলিশ হতে চার বছর লেগেছিল, এই চার বছর তার কিছু ছিল না। কিন্তু তারপর ২/৩ বছরে এরকম পাঁচ ছয়টা পেপার পাবলিশ করে ফেলেছিলেন। কিন্তু ঐ চার বছর পর্যন্ত ধৈর্য্য ধরে রাখাটা কঠিন ছিল অবশ্যই। একটা ভাল রিসার্চ একটা বাল জায়গায় পাবলিশ করাতে অবশ্যই টাইম লাগবে।
মৌসুমি : আমি নাফিসার রেস্পন্সের সাথেই কিছু এড করি। আর্বানা শ্যাম্পেইনে যেটা ট্রেন্ড ছিল এডভাসররা সবাই এটলিস্ট মোর অর লেস তিনটা খুব ভাল পাবলিকেশন চাইতো। ওখানে দুইটা না থাকলে হয়তো তুমি পিএইচডি করে বের হতে পারবা না। আবার নাফিসার মত আমারো প্রফেসর ছিলেন অমন। তিনি চাইতেন যে আমরা কেবল এ কনফারেন্সেই পাবলিশ করি, এছাড়া আর কোন কনফারেন্সে পাবলিশ করা যাবে না। অনেক সময় কিছু প্রফেসর এটা এলাউ করেন যে তুমি এ তে চেষ্টা করো, না হলে বি তে দেখো। তবে অনেক এডভাইসরই হয়তো এটা চাইবেন না। আমি আমার স্টুডেন্টদের সাথে যেটা করি আরকি আমরা তো মানুষ, তিন চার বছর ধরে কোন সাক্সেস ছাড়াই মোটিভেশন ধরে রাখাটা কঠিন। স্টুডেন্টদেরকে বলি তোমরা তোমাদের কাজ সবচেয়ে ভাল জায়গাতেই পাবলিশ করার চেষ্টা করবে কিন্তু আমরা আরো কিছু ছোট ছোট জায়গাতেও সাবমিট করবো। যেমন আমরা ফ্যাকাল্টি হায়ার করার ক্ষেত্রে দেখি যে তার টপ ভেন্যুতে কয়টা পেপার আছে, তিন চারটা টপ ভেন্যু পাবলিকেশন থাকলে সে ফ্যাকাল্টি হবার যোগ্য। তো ভেন্যু গুলোতে পোস্টার থাকে, ওয়ার্কশপ থাকে, ওয়ার্কিং প্রগ্রেস থাকে। আমার কাছে মনে হয় তোমার এডভাইসর যদি চায় যে তোমাকে একদম টপ জায়গায় দিতে হবে তাইলে ঐ ছোট ছোট জিনিসগুলাও এক্সপ্লোর করা উচিত। একারণে অল্টার্নেট ভেন্যুগুলো দেখা এবং টপভেন্যুগুলোতেও ছোট ছোট জিনিসগুলা দেখা উচিত। আরেকটা ব্যাপার যেতা হয়তো মুশফিক যেটা বললে যে চার বছর পর আমি ভেবেছিলাম আমি অনেককিছু করবো কিন্তু হয়তো করা হলো না সেক্ষেত্রে জিনিসটাকে আরেকটু ভিন্নভাবে চিন্তা করা উচিত। যেমন তোমার রিসার্চ এরিয়া ডেটা সায়েন্স, তমার টপভেন্যু তে পেপার পাবলিশ না হলেও চার বছর এতকাজ করেছ তুমি কিন্তু এই এরিয়াতে অনেক কিছু জানো, ইন্ডাস্ট্রিয়াল টুল গুলো জানো, ঐ এরিয়ার ক্লাসিক পেপার গুলো জানো, এগুলাও কিন্তু অনেক বড় একমপ্লিশ্মেন্ট। যেমন আমার স্টুডেন্টরা একটা রিলেশনশিপ বিল্ডিং এপ বানিয়েছে, বেসিকালি তাদের জন্য যারা ফ্রেন্ড বানাতে পটু না। আমরা ফোকাস করেছিলাম অটিজমে এবং আমি তাদেরকে অনেক উৎসাহ দিয়েছি যে এটা একটা পেপার না কিন্তু এটাকে এপস্টোরে তো ছাড়তে পারবে। আবার তুমি যদি একটা এল্গরিদম বের করো, জাস্ট মেক ইট ওপেন সোর্স, যখন অনেক মানুষ সেটা ব্যভার করবে সেটাও কিন্তু একটা একমপ্লিশ্মেন্ট। তুমি যখন জব মার্কেটে যাবে তখন এগুলো দেখাতে পারবে। যেজন্য ছোট ছোট জিনিসগুলো গুরুত্বপূর্ণ।
মুনতাকা : আচ্ছা আপু, পিএইচডি লাইফে ভ্যাকেশন কিরকম পাওয়া যায় এব্যাপারে কিছু যদি বলতেন।
নাফিসা : আমি যদিও এখনো পিএইচডি লাইফে যাইনি তবু বলি। আমি গত বছর একটা একমাসের ছুটি নিয়েছিলাম। আমার প্রফেসর এর সাথে আমার আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল এবং আমি আগে থেকে বলেও রেখেছিলাম তাকে। তো আমি পার্সোনালি ওরিড না ভ্যাকেশন নিয়ে, হয়তো অন্য কারো অভিজ্ঞতা ভিন্ন হতে পারবে।
মৌসুমি : আমি আমার লাইফে সবচেয়ে বেশি ঘুরেছিই পিএইচডি মাস্টার্স লাইফে (হাসি)। আমি মাস্টার্সে কাজ করেছি একজন বাংলাদেশী প্রফেসরের সাথে, পিএইচডিতে একজন সাদা আমেরিকান প্রফেসর ছিলেন। মেম্ফিসে যখন ছিলাম তখন একজন ইন্ডিয়ান প্রফেসরের সাথে কাজ করেছি। আর এখন তো আমি নিজেই ফ্যাকাল্টি। আমার কাছে যেটা মনে হয়, আমেরিকান প্রফেসররা এসব ব্যাপারে ওপেন। তোমার কাছে তাদের কিছু এক্সপেক্টেশন আছে, তুমি ওগুলা কমপ্লিট করলেই তারা এর বেশি কেয়ার করে না। আর্বানা শ্যাম্পেইনে আমি যেটা দেখেছি তারা মিড ডিসেম্বরের থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কেউই কাজ করে না, ক্রিস্মাসের আমেজ থাকে পুরোটা সময়। ঐ সময়টা তুমি যদি নিজের দেশেও ঘুরে আসো তাহলে সমস্যা নাই। আবার কনফারেন্সে গেলে আমি প্রচুর ঘুরতাম, ঐ শহরটাতে হয়তো আর যাওয়া হবে না, ঘুরে ফেলতাম শহরটা। যদিও কনফারেন্স ঘুরার সময় না। এখন আগে কনফারেন্স করে পরে আলাদা সময় রাখি ঘুরার জন্য। আমার মাস্টার্সের যেই প্রফেসর তার সাথে আবার আমার এমন হয়েছে যে তিনি বলছেন উইকেন্ডেও এসো কাজ করে ফেলি কিন্তু আবার আমেরিকান প্রফেসর কখনোই আমার থেকে ঐ এক্সপেক্টেশনটা রাখেননি। তো ভ্যাকেশন নেওয়াটাও ইম্পরট্যান্ট আর এব্যাপারে আপফ্রন্ট হওয়াটাও জরুরি।
মুশফিক : বেশ ইন্টারেস্টিং। মৌসুমি আপু আসলে বোথ সাইড দেখেছেন তো আপনার কথাগুলো বেশ মজা লাগছে আমার। আমাদের হীরাভাই একটা সুন্দর প্রশ্ন করেছেন, “আমি কখন বুঝতে পারবো যে আমি একটা মেন্টাল স্ট্রেস সিচুয়েশনে পরে গেছি?” যেমন আমি পার্সোনালিও অলসতা করে সময় নষ্ট করে ফেলি পরে আমার মধ্যে ভয় কাজ করে। এটা তো আসলে আমার মেন্টাল স্ট্রেসের কারণে হয়নি এটা হয়েছে আমার নিজের দোষের কারণে। তো কখন বুঝবো যে এটা একটা সিরিয়াস ইস্যু হয়ে গেছে?
মৌসুমি : এটার জন্য আসলে আমাদের একটা মাইলস্টোন সেট করে ফেলা জরুরি এবং সেটাকেও ছোট ছোট কয়েকটা ভাগে ভাগ করে ফেলা দরকার। যেমন আমি একটা প্রসেস ফলো করি, যে আমি একটা দিনে কি কি একমপ্লিশ করতে চাই, একটা সপ্তাহে কি কি একমপ্লিশ করতে চাই, একটা মাসে কি কি একমপ্লিশ করতে চাই, একটা বছরে কি কি একমপ্লিশ করতে চাই। এটা একটা রাফ গোল। যেমন আমি বছরে চারটা পেপার করতে চাই তাহলে মাসে কয়টার কাজ করতে হবে, সপ্তাহে কিভাবে কাজ করতে হবে এটা বোঝা। তারপর ব্যাপারটাকে ট্র্যাক করা। যদি দেখা যায় যে তুমি কন্সট্যান্টলি ল্যাগিং বিহাইন্ড, এটার পিছনে দুইটা কারণ থাকতে পারে। এক হতে পারে তোমার গোলগুলি আনরিয়ালিস্টিক ছিল। অথবা এটা হতে পারে যে তুমি আসলে প্রোক্র্যাস্টিনেট করছো। এক্ষেত্রে স্ক্রিন টাইম ট্র্যাক করা যেতে পারে যে আমরা কোন এপে কিরকম সময় দিচ্ছি।
নাফিসা : আমার ক্ষেত্রে প্রোক্র্যাস্টিনেট করলে তো আমি বুঝতে পারি যে আমার সময় আছে আমি কাজটা পরে করবো বলে রেখে দিচ্ছি। কিন্তু স্ট্রেসড হয়ে গেলে বুঝা যায় তখনই যে আমি আমার কাজটা করছিনা আবার ঐ সময়ে আমি অন্য কিছুও উপভোগ করছি না। এক্ষেত্রে ছোট ছোট গোল সেট করে সেটা ধরে আগানো অনেক হেল্প করে মৌসুমি আপু যেটা বললেন। আবার স্ট্রেসের ক্ষেত্রে আমার কাউন্সেলর আমাকে যেটা বলতেন বারবার যে তুমি কি ফিজিক্যালি কিছু ফিল করছো কিনা। আমার ক্ষেত্রে যেরকম আমার ঘাড়ের পিছনে একটু গরম ফিল করি, নিশ্বাস বেড়ে যায়। মুশফিক মেন্টাল হেলথ নিয়ে তো অনেকক্ষণ কথা বললাম। বাইরে থাকা অবস্থায় তো এরকম হতে পারে যে আমি অসুস্থ হয়ে পড়লাম, তখন কি করবো?
মৌসুমি : সব স্কুলেই স্টুডেন্ট হেলথ সেন্টার থাকে এবং এগুলো বেশ ভালও। ঐটাই হবে ফার্স্ট চয়েস। আমেরিকার কথা যদি বলি ওদের হেলথ কেয়ার সিস্টেম অত ভাল না, আবার তুমি যেহেতু স্টুডেন্ট, তোমার ইনকামও অত বেশি হবে না। অনেক সময় হেলথ ইন্স্যুরেন্সের টাকা দিলেও মেডিসিনের দাম এত বেশি যে ইন্স্যুরেন্সে কভার করছে না। তো বাইরের দেশে আমাদের বাঙালি ডাক্তাররাও তো আছেন তারা ও বেশ হেল্পফুল। আবার তোমার যদি ইন্স্যুরেন্স নাও থাকে তারা তোমাকে সাধারণত ট্রিটমেন্ট দিবে, হয়তো পরে বিশাল একটা বিল ধরিয়ে দিবে, কিন্তু ট্রিট তোমাকে করবে তারা। আর হঠাত বাসায় খারাপ ফিল করলে ৯১১ এ কল করতে হবে। তো সাপোর্ট সিস্টেম থাকাটা জরুরি, স্টুডেন্ট হেলথ কেয়ার, ইন্স্যুরেন্স, সবশেষে অক্সিলারি সাপোর্ট বাঙালি ডাক্তাররা।
নাফিসা : কানাডার সিস্টেমটা একটু আলাদা আমেরিকার চেয়ে। এখানে হেলথ সিস্টেমটা কাইন্ড অফ ফ্রি, ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের জন্য না যদিও। সো এখানে এগুলা নিয়ে আসলে চিন্তা করা লাগে না। আমি নিজেও কখনো টাকা নিয়ে চিন্তা করি নাই বা এরকম বিলও এখানে ধরায় দেওয়া হয়না। আমি বলবো যে তোমাকে একটা ভাল ফ্যামিলি ডাক্তার খুঁজে বের করতে হবে, অন্য ডাক্তার দেখানোর ক্ষেত্রেও তিনি তোমাকে রেফার করে দিবেন। ইন্স্যুরেন্স মোটামুটি সবকিছুই কভার করে আর সবারই মোটামুটি কভার করে তাই সমস্যা হয় না। লং টার্ম কোন থেরাপি হয়তো ইন্স্যুরেন্স কভার করে না যেমন কোন থেরাপি যদি আট সেশনের বেশি হয় তাহলে হয়তো করে না। অনেক স্কুলেও আবার স্টডেন্টদের জন্য একটা এমাউন্ট থাকে। তো কানাডাতে হেলথ ইস্যু নিয়ে তেমন চিন্তা করা লাগে না।
মৌসুমি : আমেরিকার হেলথ কেয়ার কিন্তু খুবই খারাপ, কানাডার সাথে কোন তুলনাই হয়না।
মুশফিক : নাদিরা মেহনাজ অর্থি একটা প্রশ্ন করেছেন নাফিসা আপুকে যে আপনি কেন কানাডাকে বেছে নিলেন এবং আপনার প্রসেসটা কতটুকু কিরকম ছিল।
নাফিসা : আমার ক্ষেত্রে অনেক আগে থেকেই আমার বিভিন্ন কারণে ইউএসএ যাবার ইচ্ছা ছিলনা। এজন্যই আমি কানাডাতে আসি, এটা একান্তই ব্যাক্তিগত পছন্দ আর কিছু না। এডমিশন প্রেসেস খুব ডিফারেন্ট। এখানে যেকোন বড় ইউনিভার্সিটিতে আসার জন্য আগে প্রফেসরকে ম্যানেজ করাটা ইম্পরট্যান্ট। প্রফেসরকে মেইল না করলেও এডমিশন পাওয়া যায় কিন্তু ঐটা খুব ভাগ্যের ব্যাপার। তো এই ভাগ্যের উপর নির্ভর করে না থেকে বারবার প্রফেসরকে নক করা দরকার। যেমন আমাদের ওয়াটারলুতে যেটা হয়, কোন প্রফেসর কাউকে পিক না করলে সে এডমিশন পায়না, সে যতই ভাল হোক।
মুনতাকা : মৌসুমি আপুর জন্য আফসারা বেনজির একটি প্রশ্ন করেছেন, “একজন প্রফেসর একজন পিএইচডি ক্যান্ডিডেটের মধ্যে কি দেখেন?”
মৌসুমি : আমার কাছে মনে হয় গ্রেডটা তখনই দেখা হয় যখন একজন প্রফেসর একজন স্টুডেন্টকে চিনেন না। এছাড়া গ্রেডটা এত বড় কোন ফ্যাক্টর না। সাধারণত মানুষের ইন্টারেস্ট, প্যাশন দেখা হয়। সবশেষে ঐ কাজটা করার মত ক্যাপেবিলিটি আছে কিনা তা দেখা হয়। যেমন আমাদের অনেক কাজে হয়তো মেশিন লার্নিং লাগে কিন্তু আমরা তো এক্সপেক্ট করবো না একটা স্টুডেন্ট মাত্র আন্ডারগ্র্যাড থেকে এসেছে সে এটা জানবে। তো আমরা দেখবো তার ঐরকম কোন কোর্স ছিল কিনা বা ঐ রিলেটেড কোন প্রজেক্টে তার ইনভলভমেন্ট ছিল কিনা। এক্ষেত্রে লেটার অফ রিকমেন্ডেশন খুবই খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। জিপিএটা এতটাও গুরুত্বপূর্ণ না। জিপিএ থ্রি থাকলেই হয়। আর এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিও একটা স্টুডেন্টের এপ্লিকেশনটাকে খুব স্ট্রং করে।
মুনতাকা : আচ্ছা আপু ধন্যবাদ। আমাদেরকে সুতপা একতা প্রশ্ন করেছেন যে পিএইচডি করার জন্য কতটুকু সিজিপিএ প্রয়োজন। মৌসুমি আপু ইতোমধ্যে এটার উত্তর দিইয়ে দিয়েছেন। আর কিছু কি যোগ করবেন?
মৌসুমি : সিজিপিএ ভাল হলে তো খুবই ভাল, এটা বোঝায় যে তুমি খুবই ভাল স্টুডেন্ট। কিন্তু ভাল স্টুডেন্ট ভাল হলেই যে রিসার্চে হেল্পফুল হবে এমনটা তো নাও হতে পারে। তো সিজিপিএ থ্রি কে তোমরা একটা কাটু অফ ধরতে পারো, বেশি হলে তো ভালই কিন্তু সিজিপিএ যে একদম পার্ফেক্টই হতে হবে এমন কোন কথা নাই। সাথে প্রজেক্ট বা রিসার্চের কাজ থাকলে পরে বেশি ভাল।
মুশফিক : আপু আমার পরবর্তী প্রশ্ন থাকবে যে আমরা কিভাবে ডিসাইড করবো যে আমরা কোন ফিল্ডে পিএইএচডি করতে চাই?
মৌসুমি : এটা আমি মনে করি প্যাশন থেকে আসা উচিত। কারণ তুমি যদি কোন কিছুতে প্যাশনেট না হও তাহলে ঐ একটা জিনিস নিয়ে পাঁচ বছর ছয় বছর কাজ করা খুবই ডিফিকাল্ট। অনেক সময় আমরা জানিনা যে আমরা কোনটা নিয়ে প্যাশনেট। সেক্ষেত্রে এখানে এসে আগে এক্সপ্লোর করা উচিত। তবে তুমি যদি কোন প্রফেসরের সাথে কমিট করে আসো তাহলে আলাদা ব্যাপার। আবার অনেকে যেটা করে যে মার্কেটে কোন জবটার ডিমান্ড বেশি সে অনুযায়ী পথ ঠিক করে, যদিও আমি এটাকে একদমই সাপোর্ট করবো না।
মুশফিক : শাওন রায়হান একটা প্রশ্ন করেছেন যে ভাল ইউনিভার্সিটি কিভাবে সিলেক্ট করবো?
নাফিসা : টু বি অনেস্ট আমার সময় আমি একটা ওয়েবসাইট ফলো করেছিলাম। তবে এখন যেহেতু আমি একটু এক্সপেরিএন্সড, সেখান থেকে আমি বলতে চাই যে কোন সাবজেক্টের জন্য যাচ্ছো এটার উপরে ইউনিভার্সিটি নির্ভর করে। এগুলো খুঁজে বের করা উচিত যে কোন ইউনিভার্সিটি এখন ঐ সাবজেক্টে ভাল করছে। ব্যাপারটা টাইম কন্সিউমিং হলেও ফার্স্টেই এই টাইমটা দিয়ে নেওয়া ভাল।
মুনতাকা : মৌসুমি আপুর কাছে একজন নিশাত তাসনিম প্রশ্ন করেছেন “Can you elaborate on such project experience? Would coursework projects count?”
মুশফিক : মৌসুমি আপু বোধহয় কানেকশন প্রব্লেম ফেস করছেন। তো আমরা নাফিসা আপুর কাছে চলে যাই যে নাফিসা আপু আপনি কি কোন কোর্স ওয়ার্ক শো করেছিলেন এডমিশনের সময়?
নাফিসা : আমি আইবিএ তে যে কাজগুলো করেছিলাম সেগুলো আমাকে অনেক হেল্প করে, আমার প্রফেসরের সাথে আমার যখন ইন্টারভিউ হয়, প্রচন্ড লম্বা ছিল সে ইন্টারভিউটা। তো আমার কোর্স ওয়ার্কের চেয়ে যেটা বেশি হেল্প করেছে সেটা হচ্ছে আমার জব এক্সপেরিয়েন্স। তো এটা না থাকলে কোর্স ওয়ার্কগুলো তেমন কাউন্ট করেননা প্রফেসররা।
মুনতাকা : নাফিসা আপুকে প্রশ্ন করবো যে আমাদের যদি বাইরে যাবার ইচ্ছা থাকে তাহলে থার্ড বা ফোর্থ ইয়ার থেকে কিরকম প্রিপারেশন নিয়ে রাখতে পারি?
নাফিসা : ক্লাস প্রজেক্টের বাইরেও কিছু একটা করা, যেমন বাংলাদেশি অনেক প্রফেসর আছেন তারা অনেক হেল্পফুল, মৌসুমি আপুর সাথেও আমার একটা ছোট একটা পোস্টার ছিল। থার্ড বা ফোর্থ ইয়ারে থাকতেই কিছু নলেজ গ্যাদার করা যেতে পারে এসব ব্যাপারে, আউটসাইড কোর্সওয়ার্ক বা যেকোন ছোট কিছু হলেও করা যায় কিনা। বা অন্য কারো রিসার্চেও থাকলে কিছু এক্সপেরিএন্স হলো। বাইরের দেশে যেসব টিচাররা আছেন তাদেরকে রিচ আউট করাটাও খুব ভাল একটা আইডিয়া।
মুনতাকা : আমার যদি বাইরে যাবো কি যাবো না এটা ডিসাইড করতে কষ্ট হয় সেক্ষেত্রে কি করবো?
নাফিসা : যদি ডিসাইড করতে কষ্ট হয় তাহলে দেশে কিছুদিন কাজ করে দেখতে পারো যে কেমন লাগে। তাহলে তুমি ডেফিনিটলি জানতে পারবে যে তুমি আসলে বাইরে যেতে চাও কি চাও না।
মুশফিক : আমরা আমাদের আলোচনার একদম শেষে চলে এসেছি। আপনারা যদি এখন স্টুডেন্টদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চান, এনিথিং এট অল।
নাফিসা : বড় স্বপ্ন দেখাটা ইম্পর্ট্যান্ট ! এন্ড দেয়ার ইজ নো শর্টকাট ! ডোন্ট হেসিটেট টু স্পেন্ড মোর টাইম অন ইয়োর রিসার্চ। স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় কিছু পেপার পড়ার অভ্যাস করে ফেলতে পারো, দ্যাট উইল বি হেল্পফুল। মেয়েদের ক্ষেত্রে কনফিডেন্সটা ইউজুয়ালি একটু কম থাকে, ডোন্ট ওরি, আমরা সবাই সিমিলার সিচুয়েশনের মধ্যে দিয়েই যাই। প্রথমে এসে একটু লস্ট থাকে সবাই। তো এগুলোকে ভয় না পেয়ে নিজেকে ইম্প্রুভ করার জন্য সময় দেওয়া উচিত।
মৌসুমি : আমি নাফিসারটাই একটু ইকো করবো। আসলে পরিশ্রমের বিকল্প নেই। যত এডভান্স ডিগ্রির দিকে যাবে জিনিসিগুলো তত চ্যালেঞ্জিং হবে এবং ডেডিকেশন থাকতেই হবে। আমি এটা বলতে পারি যে যত স্টুডেন্ট দেখেছি, বাংলাদেশি যত স্টুডেন্ট দেখেছি, তাদের ইন্টেলেকচুয়াল ক্যাপেবিলিটি কারোরই কম ছিল না, কিন্তু ডেডিকেশনটাই পার্থক্য গড়ে দেয়। এবং সবকিছু আসলে ট্রাই করে দেখা যে আমার কোনটা ভাল লাগছে, এখন তো এগুলো আরো সহজ, কোর্সেরা তে কোর্স করে দেখা বা কোথাও কোন ওপেনসোর্স প্রজেক্টে কন্ট্রিবিউট করা। অথবা ভার্সিটির ইমিডিয়েট সিনিয়রদের সাথে কথা বলা, যারা এখন বাইরে আছেন তাদের সাথে কথা বলা, প্রফেসরদের সাথে কথা বলা, যারা ইন্ডাস্ট্রিতে আছেন তাদের সাথে কথা বলা, এগুলো আসলে খুবই ইম্পর্ট্যান্ট। আর তাছাড়া প্রচুর বই পড়তে হবে, বই পড়ার বিকল্প নাই। নাফিসা যেটা বলল পেপার পড়া যেতে পারে একটা সিস্টেমেটিক উপায়ে। তো তুমি যেই টপিকে ইন্টারেস্টেড তার টপ কনফারেন্সগুলো আইডেন্টিফাই করো, সেখান্ থেকে কোনগুলো বেস্ট পেপারের এওয়ার্ড পেল সেগুলো দেখো। তারপর পড়া শুরু করো, হয়তো অনেককিছু বুঝতে পারবেনা, কোন সমস্যা নেই, অথরদের মেইল করো যে আমি এটা বুঝতে পারিনি তোমরা এটা কেন করলে। তো এভাবে এই ক্রিটিকাল থিঙ্কিংটা কে বাড়ানো দরকার হুইচ ইস এ ভেরি ভ্যালুয়েবল থিং। আমরা বুয়েটে থাকতে কায়কোবাদ স্যর আমাদের ১-১ থেকেই বলতেন তোমরা পেপার পড়। আমরা ফোর্থ ইয়ারে উঠার পর ব্যাপারটাকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছি যদিও ঐটা যে কত গুড একটা এডভাইস সেটা আগে বুঝিনি।
মুনতাকা : অনেক অনেক ধন্যবাদ মৌসুমি আপু এবং নাফিসা আপুকে আমাদের সাথে থাকার জন্য। আমাদের আজকের আলোচনা আমরা এখানেই শেষ করছি।