সঞ্চালকঃ আমাদের সাথে আজকে আছেন হাবিব উল্লাহ বাহার ভাইয়া, যিনি Field Buzz এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। প্রথমেই ভাইয়া আপনার কাছ থেকে আপনার সম্পর্কে জানতে চাই।
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ ধন্যবাদ BSAAD কে এইরকম একটা উদ্যোগ নেওয়ার জন্য, আমাদের সময়ে আমরা যখন বুয়েটের Student ছিলাম তখন এমন সুযোগ-সুবিধা (Facebook Live) ছিলো না। তোমাদেরকে ধন্যবাদ এইরকম সুযোগ করে দেয়ার জন্য, আমি আমার এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করতে পারছি, অন্যদের থেকে জানতে পারছি। আমি বুয়েটের সিএসই-০৩ ব্যাচ। পাশ করার পরপরই আমি ব্যাবসা শুরু করে দিয়েছিলাম। Field Buzz আমার শুরু করা তৃতীয় কোম্পানি। আমি শুরু করেছিলাম “প্রোগম্যাটিক ডেভেলপার নেটওয়ার্ক” নামে একটা সফটওয়ার কোম্পানি দিয়ে, সেইখানে Customized Software ডেভেলপ করতাম। তারপরে “6Degree Communications Ltd” নামে আরেকটি কোম্পানি শুরু করি।আমার আরেক বন্ধু সাদেকের সাথে, সে ও বুয়েটের ইলেকট্রিকালের ০৩ ব্যাচের। তার পরিক্রমায় এখন হচ্ছে Field Buzz , সেটাও প্রায় ৬ বছর হয়ে গেলো। ফিল্ডবাজের পরে আসলে নতুন কোনো কোম্পানি দেয়ার আপাতত প্ল্যান নেই। আশা করি, গল্প করতে করতে আরো জানা যাবে :)
সঞ্চালকঃ থ্যাংক ইউ ভাইয়া। তো শুরু থেকে যদি শুরু করি। আমাদের সবাই CSE তে যখন মানুষ ভর্তি হয়, কেউ জিজ্ঞেস করে কি করতে চাও, তখন দুইটা খুব কমন এন্সার থাকে। একটা হচ্ছে গুগলে জব করব আর আরেকটা হল নিজেরা একটা Startup দিব। এইজন্য আমরা একজন Entrepreneur হিসাবে আপনাকে নিয়ে এসেছি, যেহেতু এই নিয়ে আমাদের সবার অনেক কৌতূহল। তো ভাইয়া, আপনি কখন সিদ্ধান্ত নিলেন আর কিভাবে সিদ্ধান্ত নিলেন যে আপনি স্টার্টাপ দিতে চান?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ (একটু হেসে) আমার যেহেতু গুগলে যাওয়ার সুযোগ ছিল না, সুতরাং অন্য অপশনটাই বাকি ছিল। আসলে আমার পরিবারের প্রায় সকলেই ব্যাবসা শুরু করেছে। আমার আব্বা ব্যাবসা করেছেন, অনেক ধরণের ব্যাবসা, এবং ফেইলও করেছেন। আমার ভাইরা ব্যাবসা করে ফেইল করেছেন। তো ব্যাবসা করব, যেই জিনিসটাকে এখন সুন্দর করে Entrepreneurship বলে সেটা আমার জন্য একদম নতুন কোন কিছু ছিল না। আমি যখন বুয়েটে CSE নেই আমার উদ্দেশ্যই ছিলো Software ব্যাবসা করব। চিন্তাভাবনা এমন ছিলো যে বুয়েট থেকে পাশ করব, তিন চার বছর চাকরি করব, কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করব, তারপর নিজের কোম্পানি দিব। এই চিন্তা ভাবনা থেকেই আমি যখন বুয়েটে পড়ি তখন আমার ক্লাসমেটরা আগে থেকে বুঝে ফেলছে যে আমি ব্যাবসাই করব, ভবিষ্যত ব্যবসায়ী :) আমি বারবার ব্যবসায়ী বলছি, Entrepreneur বলছি না তার কারণ হল, চিন্তা ভাবনা আসলে ওই রকমই ছিলো যে ব্যবসায়ী হব। Entrepreneur চিন্তা ভাবনার সাথে সেভাবে পরিচয় ছিল না। তারপর বুয়েট থেকে পাশ করে গুলশান-১ এ একটা সফটওয়ার কোম্পানীতে জয়েন করলাম। সেখানে তিন মাসের মতন ছিলাম। আমার বাসা ছিলো হচ্ছে আজিমপুরের দিকে, আর অফিস গুলশানে। তো বাসে করে যেতে হত আর ফিরতে হত। যেই পরিমাণ ট্রাফিক জ্যাম ছিলো, দেড়-ঘন্টা দেড়-ঘন্টা মিলিয়ে তিন ঘন্টা। দেখা যেত আমি বাসা থেকে সাতটায় বা পৌনে সাতটায় বের হতাম, ওখানে গিয়ে সোয়া আটটায় পৌছাতাম।তারপরে আবার চারটার সময় বেরিয়ে যেতাম, ন্যূনতম ছয়টা বাজত পৌছাতে। আমি বুয়েটের ৩-২ (লেভেল-৩, টার্ম-২) থেকেই বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং কাজ করা শুরু করি। Not necesserily ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটের through তে। বিভিন্ন কাস্টোমারের through তে, ফ্রেন্ডদের কানেকশনের through তে। তখন থেকেই একটা চিন্তা ভাবনা ছিলো যে একটা টিম ডেভেলপ করব, টিমের পরে একটা কোম্পানি তৈরি হবে। তো যখন ঐ তিন মাসের এক্সপেরিয়েন্সের পরে আমি বাসায় ফিরতেছিলাম, তখন চিন্তা করলাম, Why to take this hussle for someone else? আমি প্রতিদিন প্রায় তিন ঘণ্টা নষ্ট করতেছি, বা চারঘন্টা। তার থেকে নিজের কোম্পানির পিছনে সময়টা দিলেই তো হয়। তো সেসব চিন্তা ভাবনা করে তিন মাস পরে আমি চাকরিতে নোটিশ দিয়ে শুরু করে দিলাম নিজের Entrepreneurship journey. তারপর থেকে এভাবেই…শুরুটা আসলে এরকমেই। সঞ্চালকঃ তো ভাইয়া, আপনি যেটা বললেন, আপনার বিজনেস ফ্যামিলি ব্যাগগ্রাউন্ড ছিলো। তো সিএসই পড়ার আগে মানে Student থাকা অবস্থায় আপনি কি কোনো বিজনেস করেছেন?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ নাহ সেরকম কিছু নাই। আমার মেজ ভাই তখনি ব্যাবসা করত, এখনো তার সেই বিজনেস আছে। ব্যাসিকালি তার প্রেস আছে, আর প্রিন্টিং এক্সেসরিস বিভিন্ন অফিসে সাপ্লাই দেয়। তো আমি তার মাল নিয়ে বিভিন্ন অফিসে গিয়েছি। তখন আমি নটরডেমে পড়ি। নটরডেমে পড়া অবস্থায় আমি এই রকম বেশ কয়েকবার গিয়েছি, মাল সাপ্লাই দেয়ার জন্য, ভ্যানের উপর বসে । আর বুয়েটে ঢুকার পরে আর এরকম কিছু করি নি। তখন মনে হয় মান সম্মান বেড়ে গিয়েছিলো যে বুয়েটে পড়ি, ডেলিভারি ম্যান হিসাবে যাব কেমন দেখায়! তবে যেটা হয়, মানুষ ব্যাবসা বা Entrepreneurship ব্যাপারটাকে ভয় করে। আমার জন্য ব্যাপারটা সেইরকম ছিলো না। কারন, I have seen others fail…start and fail. তাই, ঐ ব্যাপারটা আমার কাছে একটু ন্যাচারালি এসেছে। আর তারসাথে আমি ফ্যামিলির সবার ছোট, রিস্ক নেয়াটা আমার জন্য একটু সহজ ছিলো। আমার ফ্যামিলি ধনী না বা এমন না যে উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া অনেক কিছু আছে। কিন্তু এটলিস্ট আমার তো অন্য কাউকে সাপোর্ট দেয়ার দরকার নেই। আমার ভাইবোন আছে, worst case Scenario তে ওরা আমাকে দেখে রাখবে। কনফিডেন্স ছিলো, ব্যাবসাই তো, প্রোডাক্ট বানাবো, সেল করব। আমি যখনি বুয়েট থেকে বের হই তখনি আমার সাথে আরো তিন চারজন ছিলেন, ০৭ ব্যাচের, সিএসইর। ওদের সাথে আমার পরিচয় ওরা যখন লেভেল-১,টার্ম-১ এ। একটা প্রজেক্ট শো হয়, ওদের দেখে আমার ভালো লেগে যায়। ওদেরকে আমি পার্ট টাইমে কাজ করতে অফার করি। বলি টিউশনি করার দরকার নাই, আমিই তোমাদের pay করব। কিন্তু ওদের দিয়ে কাস্টোমারের কাজ করাতাম না, পুরো উদ্দেশ্য ছিলো টিম ডেভেলপ করা।
সঞ্চালকঃ ভাইয়া শুরুর দিকে একজন entreprenerur এর কি কি স্কিল থাকা দরকার বলে আপনি মনে করেন ?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ আমার Entrepreneur জীবনের অন্যতম ভুল ছিল আমি শুরু দিকে সেলস, মার্কেটিং এসব নিয়ে চিন্তা করি নি। I was too focused on engineering. Make the best product and people will buy. কিন্তু আসলে তোমার যত ভালো প্রোডাক্টই থাকুক মানুষ না জানলে তার দাম নাই। নেগশিয়েশনেও একটু বাজে ছিলাম। আরেকজনের সাথে কথা বলতে পারার ব্যাপারটাই আসলে অনেক কিছু পালটে দেয়। আর আমাদের বুয়েটে Communication এর ব্যাপারটাকেই সবচেয়ে বেশি ইগ্নোর করা হয়। এক্ষেত্রে আমি sample email গুলো ফলো করতাম, তাদের মতন লেখার চেষ্টা করতাম। এরপরে যে জিনিসটা দরকার হয় তা হল টিমওয়ার্ক। ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে অনেকে আছে যারা একা অনেক ভালো কাজ করতে পারে, কিন্তু দুইতিন জন মিলে প্রোজেক্ট দাড় করিয়ে ফেলবে, Work-distribution হবে এই জিনিসটায় এতো এফিশিয়েন্ট না। তারপরে দরকার হয় লিডারশিপ। অনেকে বলে এইটা হঠাৎ করে আসে না। তো আমি চেষ্টা করতাম ক্লাস ক্যাপ্টেন হওয়ার। স্কুলের রিইউনিয়ন এ চেষ্টা করতাম অর্গানাইজ করা। বাকি জিনিস গুলো আমি মনে করি ডেরিভেটিভ। বাকি স্কিলগুলো আস্তে আস্তে এসে যাবে।
সঞ্চালকঃ ভাইয়া, এই স্কিলগুলোকে Soft-skill বলে এই কারণেই যে বই পড়ে এসব শেখা যায় না। আপনি কিভাবে এই স্কিল গুলো ডেভেলপ করার রেকমেন্ডেশন দিবেন?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ প্রথমত ক্লাব এক্টিভিটিজ। তারপরে ট্যুর/ স্পোর্টিং ইভেন্ট অর্গানাইজ করায় থাকা। বিশেষ করে সিএসই ডে’র কথা যদি বলি, আমি সবসময় খাবারের দায়িত্বে থাকতাম। আর এখন তো বুয়েটে Entrepreneurship Development Club (EDC) ই আছে। আমার মনে হয় , নিজেকে যত বেশি পুশ করা যায় আনকম্ফোর্টেবল জোনের দিকে, ততই নিজেকে ডেভেলপ করা যায়।
সঞ্চালকঃ ভাইয়া Entrepreneur হওয়ার জন্য কি MBA করার দরকার আছে?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ আমার মনে হয় অতি প্রয়োজনীয় না, কিন্তু যদি কেউ করে তাহলে ইনিশিয়ালি অনেক ভুল এড়ানো যায়। আমি বুয়েট থেকে পাশ করে MBA করলে অনেক কিছু দ্রুত শিখতে পারতাম, Proper guideline তৈরি করা, product pricing করা, product dossier তৈরি, কোম্পানীর প্রোফাইল তৈরি এই দিকগুলোতে থিয়রিটিক্যাল দিক থেকে সুবিধা পাওয়া যেত। একইসাথে MBA একটা নেটওয়ার্কও দেয়। আর কারো যদি ম্যানেজমেন্টে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে (সেলস, মার্কেটিং, HR),তাহলে আমি মনে করি তাড়াতাড়ি MBA করা বেটার। এক্ষেত্রে সবকিছুর কষ্ট বেনিফিট এনালাইসিস করা উচিৎ। আমি MBA করছি, এতে কি পরিমান সময় আর অর্থ দিচ্ছি, তার বিনিময়ে আমি কি পাচ্ছি। তাহলেই MBA করার দরকার বোঝা যাবে।
সঞ্চালকঃ ভাইয়া, রিস্ক ম্যানেজমেন্টের ব্যাপারে যদি কিছু বলতেন, মানে একজন entrepreneur হতে চায় তারা রিস্কের সাথে কিভাবে ডিল করবে?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ রিস্কের ব্যাপারটা আসলে একটা ক্যালকুলেশন। কেউ যদি বুঝতে পারে যে নেক্সট এক বছর তার ইনকামের উপর কেউ নির্ভর করবে না তাহলে রিস্ক নেয়া যায়। আরো কেউ চিন্তা করতে পারে আমি দুই বছর চাকরি করব, X পরিমান টাকা আয় করব, ক্যাপিট্যাল হিসাবে, তারপর এক বছর স্টার্ট-আপের এটেম্পট করব। যদি এইটা কাজ করে তাহলে entrepreneurship জার্নি চালিয়ে যাব, নাহলে চাকরিতে ব্যাক করব। এইটা সত্য, রিস্ক নিতেই হবে। তবে অন্ধের মতন রিস্ক না নিয়ে ক্যালকুলেটিভ রিস্কই নেয়া উচিৎ।
Sadek M Saikat: সফল উদ্দ্যোগতা হতে গেলে স্কিলড টিম কতখানি দরকার?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ যদি এমপ্লয়িদের কথা বলি, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্কিলড ম্যানপাওয়ার পাওয়া কঠিন। সেইখানে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে, সিনিয়র লেভেল থেকে লোক না নিয়ে জুনিয়র লেভেল থেকে আস্তে আস্তে টিম ডেভেলপ করাটা বেটার।
সঞ্চালকঃ ভাইয়া, স্টার্ট-আপের পার্টনার নির্বাচন করার সময় কি কি জিনিস খেয়াল রাখতে হয়?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ ফাউন্ডারদের কমপ্লিমেন্টারি স্কিলসেট থাকা অনেক জরুরী। ফাউন্ডারদের কেউ সেলস-মার্কেটিং এ দক্ষ, আর কেউ টেকনিক্যাল সাইডে দক্ষ, এই ধরনের কোম্পানী বেশি edge পাবে। কেউ ই-কমার্স সাইট বানালে সেখানে একজনের হওয়া উচিৎ টেকনিক্যাল সাইডের, একজন হয়ত সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের আর আরেকজন হয়ত সেলস-মার্কেটিং এর। এতে কোম্পানিও ভালো চলে আর ফাউন্ডারদের মধ্যে দ্বন্দ্ব না হয়। সমদক্ষতার দুইজনের মধ্যে কেউ বেশি ফেসভ্যালু পায়, কেউ পায় না। আমরা মানুষ, স্বভাবতঃ ঈর্ষা কাজ করে। কিন্তু ফাউন্ডাররা কমপ্লিমেন্টারী দক্ষতা হলে এইটা এড়ানো যায়।
সঞ্চালকঃ তিনজন ডেভেলপার দিয়ে খোলা কোম্পানি , ক্রমে ৩০ জন ইঞ্জিনিয়ার, আর তারপর ইঞ্জিনিয়ার, HR, Product owner সহ শতাধিক মানুষের কোম্পানির মধ্যে কি পার্থক্য আছে?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ আকাশ-পাতাল পার্থক্য। আমার কোম্পানি যখন ছোট ছিলো, তখন সবার সাথে কথা বলার সুযোগ ছিলো, সবাই কি কাজ করছে আমি জানি। কিন্তু আস্তে আস্তে যখন কোম্পানি বড় হল তখন আসলে সবার সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ ছিলো না। হায়ারার্কি বা টাস্ক ডেলিগেট করাটা জরুরি। আমি সিইও হয়ে যদি সবাইকে টাস্ক ডেলিগেট করি তাহলে সব সামলানো সম্ভব না, ইস্যু তৈরি হবে। এর থেকে ভালো হল প্রথম থেকেই ম্যানেজার তৈরী করা। বাংলাদেশে ভালো ম্যানেজার পাওয়া কঠিন, তাই আমরা আমাদের ডেভেলপারদের প্রোজেক্ট ম্যানেজারের দিকে পুশ করেছি।যখন কোম্পানি ৩০ এ পৌছালো তখনই আমাদের ২টা লেভেল, আর এখন ৪টা লেভেল। ফ্রেশার যারা আছে তারা সিনিয়র ডেভেলপারের সাথে ডিল না করে তার উপরের যে আছে তার সাথে কাজকর্ম করে। এইটাই বড় পার্থক্য।
সঞ্চালকঃ প্রোজেক্ট ম্যানেজার হতে গেলে MBA করা প্রয়োজন?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ একজন ম্যানেজার আসলে প্রোডাক্টকে শুন্য থেকে শুরু করে।তাকে কাস্টোমারের থেকে প্রোডাক্ট প্লানিং, এক্সিকিউশন করা, জুনিয়র ডেভেলপারদের গাইড করা, কাজ বন্টন করা, কোড পুশ করা হলে তা রিভিউ করা, মার্জ করা, এসব কাজ। সেম স্টার্টাপে থাকলে ম্যানেজমেন্ট রোলে যাওয়া আসলে সহজ।এক্ষেত্রে MBA জরুরী না। এক্ষেত্রে কিছু সার্টিফিকেশন কোর্স করা যায়, PMP(Project management professional ), Scrum master certification। কেউ চাইলে এমবিএ করতে পারে তবে অন্তত সফটওয়ার খাতে প্রোজেক্ট ম্যানেজার হতে MBA দরকার নেই।
সঞ্চালকঃ একটা ছোট টিমের জন্য কি ম্যানেজার রাখা জরুরী?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ ম্যানেজার অবশ্যই অনেক দক্ষ আর অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কাউকে হতে হয়। ছোট টিমের পক্ষে ম্যানেজারকে এফোর্ট করতে পারার কথা না। এক্ষেত্রে ফাউন্ডারকেই ম্যানেজারের রোল নিতে হয়। আর টিমে কাউকে প্রমিসিং মনে হলে আস্তে আস্তে তাকে কাজ ডেলিগেট করা শুরু করতে হয়। এতে সুবিধা হল হোম-গ্রোউন ম্যানেজার পাওয়া যায়। একইসাথে ঐ ম্যানেজারকেও পুরস্কৃত করা উচিৎ। আমি আগে থাকে যে স্যালারি দিতাম, ম্যানেজার রোলের জন্য তাকে আরো বেশি স্যালারি দিব। এটা বাইরে থেকে ম্যানেজার আনার চেয়ে সুবিধাজনক।
সঞ্চালকঃ কোন কোন উপায়ে আমরা ইনিশিয়াল ফান্ডিং জোগাড় করতে পারি?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ ফ্রেন্ডস আর ফ্যামিলি, যেইটা কে আমরা সিড-ফান্ডিং বলি। বুয়েটের এলাম্নাই নেটওয়ার্ক আছে, যেখানে অনেকেই ইনভেস্ট করতে আগ্রহী থাকেন। আসলে বেশি টাকার তো দরকার নেই ৪-৫ লাখ টাকা হলেই শুরু করা যায়। তারপরে বড় ভাই, ধনী বন্ধু থেকে টাকা ধার নেয়া যায়। তবে কোনো ধরণের টাকা নেয়ার আগে নিজের আইডিয়াটাকে ভ্যালিডেট করা উচিৎ। যতক্ষণ পর্যন্ত না রেভেনিউ জেনারেট করছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি মনে করি না তা ভ্যালিডেটেড। প্রোটোপটাইপ, পাইলট তৈরি করলে ফান্ডিং পাওয়া টা সুবিধার। এক্ষেত্রে MVP(minimum viable product) তৈরি করা উচিৎ। তারপরে একটা স্টেজে এসে BD Venture, Bangladesh Angle Investment Network এর মতন অর্গানাইজেশনের কাছেও যাওয়া যায়।
সঞ্চালকঃ এক্ষেত্রে ক্রাউড ফান্ডিং বাংলাদেশে কতটা জনপ্রিয়?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ যারা একটু টেক নিয়ে ঘাটাঘাটি করে তারা kickstarter এর নাম শুনেছে। এইটাই সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রাউড ফান্ডিং সাইট। এক্ষেত্রে মডেলটা হল আমি বিশেষ ডিসকাউন্ট বা রিওয়ার্ড বা কোম্পানির শেয়ারের বিনিময়ে ইনভেস্ট চাই ক্রাউড এর কাছ থেকে। তবে ট্রাস্ট ইস্যুর কারনে বাংলাদেশে এরকম সাইট আছে কিনা আমার জানা নাই। এ সংক্রান্ত সরকারী নীতিও স্বচ্ছ না। তবে কেউ চাইলে দেশের বাইরে আছেন, এমন এলাম্নাই এর সহায়তা নিয়ে তার একাউন্ট নাম্বারের মাধ্যমে কিক-স্টার্টার থেকেই ফান্ড পেতে পারে।
সঞ্চালকঃ শুরুর দিকে সীমাবদ্ধ বাজেটে দক্ষ লোক নিয়োগ করব কিভাবে?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ আমার মনে হয় ফাউন্ডারদের এমন হতে হয় যেন তারা ইনিশিয়াল রেভিনিউ জেনারেট করতে পারে। তারা এই সময়ে স্যাক্রিফাইস করবে, বলার মতন কোনো বেতন নিবে না। আর সেই রেভিনিউতে তারা সঠিক এটিটিউডের দুইজন কর্মীকে নিয়োগ করবে, যাদের আস্তে আস্তে ডেভেলপ করবে। এইজন্য ইন্টার্ন বা পার্ট-টাইম এমপ্লইয়ি নিয়োগ দেয়া যায়। এক্ষেত্রে পারসোনাল রেফারেন্স গুরুত্বপুর্ণ। এক বা দুই মাসে বুঝা যাবে তারা কেমন। এরাই কোম্পানিকে দুইবছরে এগিয়ে নিয়ে যাবে, রেভিনিউ জেনারেট করবে। দুঃখজনক হলেও সত্য, পুরো সময় স্যাকরিফাইস করতে হয় ফাউন্ডারদের। প্রথম দুইবছরে Field Buzz এ আমরা দুইজন ফাউন্ডার কোনো স্যালারি নেই নি। কিন্তু নিশ্চিত করেছি সবাই যেন তাদের স্যালারি পায়।
সঞ্চালকঃ একজন উদ্দ্যোগতাকে সাধারণ একজন চাকরিজীবী থেকে কয়েক-গুন বেশি চাপ সামলাতে হয় এইটা কতটা সত্য?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ এইটা আসলেই সত্যি। প্রোগম্যাটিকে আমাকে ১৩-১৪ ঘন্টা কাজ করতে হত। সকালে ৬ টায় উঠতাম, ইমেইল চেক করতাম। সারাদিন ডেভেলপারদের সাথে কাজ করার পর বাসায় এসে আবার নিজে কাজ করতে হত। শুরুর দিকে খরচ কমাতে আপনাকেই অনেক কিছু করতে হয়, কাস্টোমারকে ফোন করা, একাউন্টেন্টের কাজ করা, এমনকি আজকে কুক কি রান্না করবে, সেইটাও ঠিক করা। কিন্তু আমার মনে হয় দীর্ঘমেয়াদী একটা সময়ে এটার প্রতিদান পাওয়া যায়। এখন দেখা যায় আমি ছুটির দিনে কাজ করি না, আবার আমি ঘুরতে গেছি কিন্তু আমার টিম কাজ করছে। আমি না থাকা অবস্থায় সংকট দেখা গেছে আর তারা সামলেও নিয়েছে।
সঞ্চালকঃ কোম্পানি চালানোর সাথে সাথে আপনি অন্যান্য অনেক এক্টিভিটি যেমন ট্রাভেলিং, ম্যারাথন, সাইক্লিং এসব কিভাবে সামলাতেন? আর ব্যাক্তিজীবনে এসব কাজের প্রভাব কি?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ এটা সম্ভব হয় প্লানিং এর জন্য। আমি সারাবছর কি কি করব এই নিয়ে একটা ধারণা তৈরী করে রাখি। কখন ট্রেকিং এ যাব, ম্যারাথন বা সাইক্লিং ইভেন্টে যাব তা টিমকে জানিয়ে রাখি। ঘুরতে গেলেও নেটওয়ার্কে থাকতাম। মেসেজিং করতাম, ইমেইলের রিপ্লাই দিতাম, Slack বা Skype এ যুক্ত থাকতাম। তবে গত তিন বছরে টিম লিডার তৈরি হওয়ায় ছুটি আসলে ছুটির মতন কাটাতে পারি।
সঞ্চালকঃ স্টার্টআপ প্রোজেক্টের intellectual property প্যাটেন্ট বা লিগ্যাল কন্ট্যাক্টের মাধ্যমে রক্ষা করার উপায় আছে? আর বাস্তবে কি তার প্রয়োগ আছে?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ সত্যি বলতে দেশে এই কন্ট্যাক্টগুলোর প্রয়োগ নেই। আমাদের কোম্পানিতে অনেক ফ্রেমওয়ার্ক আছে, কাউকে জয়েন করানোর সময় প্রচুর কাগজ সাইন করানো হয়। কিন্তু আসলে এগুলো কতটা প্রয়োগযোগ্য তা আমি নিশ্চিত না। তবে মাথায় রাখতে হবে, Execution is much harder than idea. আমাদের সোর্স কোড গুলো অনেক সিকিউর করা, কিন্তু তারপরও কেউ চুরি করে নিয়ে গেলেও এমন না যে সে রাতারাতি এক্সিকিউশন করতে পারবে। কারণ এইখানে কাস্টোমার একুইজিশন,কাস্টমার রিটেনেশন, সেলস, মার্কেটিং, সেলস সাইকেল মেইন্টেইনের ব্যাপার আছে। তাই আমার মনে হয় না এই নিয়ে এত ভয় পাওয়ার কিছু আছে।
সঞ্চালকঃ বই পড়ার অভ্যাস কতটা গুরুত্বপুর্ণ (পাঠ্যবই না)?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ হ্যা বই পড়া গুরুত্বপুর্ণ। এইটা মনের জানালা খুলে দেয়। আমি চেষ্টা করি বই পড়ার। সপ্তাহে অন্তত একঘন্টা পড়ি, নাহলে নিজের মধ্যে খারাপ লাগা কাজ করে। সবসময় যে শেখার জন্য পড়ি তা না, ভালো লাগার জন্যও পড়ি। অনেক কিছু বই পড়ে শেখাও যায়। আমি কিছুদিন আগে জেফ বেজসের entrepreneurship জার্নি নিয়ে লেখা বই “The everything store” পড়লাম, অনেক কিছু জানলাম। এইখানে একটা জিনিস মনে গেথে গিয়েছে,”with every hire, we raise the bar”। ছয়মাস পরে একই পোস্টে আরেকজনে নিয়োগ দিলেও আপনি তার কাছে বেশি কিছু চাইবেন কারন কোম্পানি ততদিনে এগিয়ে গেছে। এইটা আমি এখন ফিল্ডবাজে প্রয়োগ করার চেষ্টা করি। এইজন্য বই পড়াটা গুরুত্বপুর্ণ।
সঞ্চালকঃ ভাইয়া,পারিবারিক দায়বদ্ধতা আর কাজের চাপের মধ্যে কিভাবে ভারসাম্য বজায় রাখেন?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ এই নিয়ে আমার অনেক দুর্নাম আছে। বাসার মানুষের কাছে আমি বেশ অসামাজিক। পরিবারকে বেশি সময় দিতে পারি নি। অনেক বিয়ের প্রোগ্রামে যেতে পারতাম না। সৌভাগ্যবসত আমার পরিবার বেশি মাইন্ড করে নি। কিছু পেতে গেলে কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, আমার পরিবার সেইটা করেছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে গত কয়েক বছরে আমি চেষ্টা করেছি পরিবারকে সময় দেয়ার।
সঞ্চালকঃ What are the major focus points for customer acquisition and retention? And what to look for in potential customers?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ আমি যেহেতু শুধু Enterprise Market নিয়ে কাজ করি তাই প্রথমে এই ব্যাপারে বলি। ইনিশিয়াল কাস্টোমার পেতে শুরুতে পারসোনাল নেটওয়ার্কটাই কাজে লাগে। সেটা ফ্রেন্ডদের মাধ্যমে, লিংকড-ইনের মাধ্যমে, ম্যাচমেকিং ইভেন্টে যেয়ে, এক্সিবিশনে যেয়ে, এমনকি কোনো দাওয়াতে যেয়েও পাওয়া যায়। এই প্রথম কিছু কাস্টোমার থেকে পাওয়া কাজ করতে অন্তত ছয় মাস লেগে যায়। কারণ একটা এন্টারপ্রাইজ সফটওয়ারের জন্য বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, অনেক ডিসিশন মেকার থাকে। ওখানে সবাইকে একমত হতে হয়, নেগোসিয়েশন থাকে। এন্টারপ্রাইজের সেলস সাইকেলও অনেক বড় হয়, এমন না যে একটা সফটওয়্যার নিলাম আর ছয় মাস পরে সেটা বদলে ফেললাম। আমাদের এইখানে এমন হয়েছে যে এক-দেড় বছরও লেগেছে।আর আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলব কাস্টোমারকে সলিউশন অফার না করে তার সমস্যা শোনাটা গুরুত্বপুর্ণ। তারপর আমি সেটা সমাধান করতে পারলে আমি প্রোডাক্ট দিব। অন্যথায় আমি যদি অন্য কোনো কোম্পানিও সাজেস্ট করি তাও তার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক থাকে আর পরে সে আমাকে অন্য আরেক কাজে সাহায্য নেয় বা কাউকে রেফার করে। আর একবার কাস্টমারকে aquaire করা হলে, অর্থাৎ সে পে করা শুরু করলে তাকে ধরে রাখাটা হল রিটেনশন। কখনো সবাইকে শতভাগ খুশি করা সম্ভব না, তারপরও আমরা ডেডিকেশনের সাথে কাজ করি। তাদের ফিডব্যাক নেই, সেই অনুযায়ী ইম্প্রুভ করি। কোন কাস্টোমার কেমন রেভিনিউ দিচ্ছে সেটা বিবেচনা না করে আমরা সবাইকে সার্ভিসে সমান প্রায়োরিটি দেই। এখানে কাস্টোমার কোনো সমস্যা জানালে ইমিডিয়েটলি তাকে রেসপন্ড করা অনেক গুরুত্বপুর্ণ ।আর mass market যেমন বিকাশ, sheba.xyz এক্ষেত্রে, Social Media তে ডিজিটাল মার্কেটিং করা, বিভিন্ন ফেয়ারে লিফলেট দেয়ার মতন অনলাইন-অফলাইন cost effective উপায় বের করা যায়।
সঞ্চালকঃ একটা বড় কোম্পানি আর একটা স্টার্টাপের নিয়োগ প্রক্রিয়ার মধ্যে কি কি পার্থক্য থাকে?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ স্টার্ট-আপগুল সাধারণত শুরুর দিকে পারসোনাল রেফারেন্সের মাধ্যমে নিয়োগ করে। তাই এক্ষেত্রে সেসব স্টার্টাপে নিয়োগ পেতে নেটওয়ার্কিং অনেক হেল্প করে। স্টার্টাপে চাকরি করার সুবিধা আছে যে, ফাইন্ডারদের সাথে ক্লোজ হওয়া যায়। অনেক বড় কোম্পানিতে কাজ আসলে অনেক স্ট্রাকচার্ড, বেশি কিছু করার সুযোগ থাকে না। কিন্তু এক্ষেত্রে স্টার্টাপে কাজের সরাসরি রেজাল্ট দেখা যায়।এক্ষেত্রে অসুবিধা হল অনেক সময় স্টার্টাপ অর্গানাইজড থাকে না, সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বাজে হয়। আর অনেক সময় কাজে পিভট করতে হয়, comfort zone এর বাইরে বের হতে হয়। সবাই এমন হয়ত চায় না।
সঞ্চালকঃ দেশের যে সফটওয়ার স্টার্ট-আপগুলো, এগুলো খুব তাড়াতাড়ি অনেক ভালো করে তারপরে হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়, এই ব্যাপারে আপনার মতামত কি?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ এইটা আসলে সব SME এর জন্যই সত্যি। আর এর বড় কারণ হল দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করতে না পারা। চিন্তা করতে হবে আজকে আমার সুদিন কিন্তু ৩-৪ বছর পরে কি হবে? মার্কেট কিভাবে চেঞ্জ হবে, ফাইন্যান্সিয়াল অবস্থার পরিবরতন হবে কিনা, আমার বর্তমান রিস্ক কি কি আছে? সেই অনুযায়ী action নিতে হবে। আমাদের কোম্পানী গুলোর Stedy revenue source এর কথা চিন্তা করা উচিৎ।
সঞ্চালকঃ ভাইয়া, নেটওয়ার্কিং কিভাবে করব। অনেকের প্রশ্ন আছে, তারা student অথবা কোথাও জব করছে,এইঅবস্থায় কিভাবে নেটওয়ার্কটাকে গ্রো করবে, যেন জব পেতে সুবিধা হয়?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ student অবস্থায় সবচেয়ে বড় networking access হল alamni.তাদের খোজ-খবর রাখা, তারা কে কোথায় কোন পজিশনে আছে, তাদের সাথে যোগাযোগ করতে চাওয়া। যেমন “বুয়েটে আড়িপেতে শোনা ” সেইটার through তে অনেক জুনিয়রের অনেক সিনিয়রের সাথে পরিচয় হয়েছে। I don’t know how it helped, but it’s a good way of networking. Everything can be an opportunity for networking. আমার নিজের কথা বলি, আমি অচেনা কাউকে নক দিতে সংকোচ বোধ করতাম যে উনি কি মনে করেন । কিন্তু এক্ষেত্রে আসলে হারানোর কিছু নাই, উনি সর্বোচ্চ রিপ্লাই দিবেন না। Again push yourself, আস্তে আস্তে দেখা যাবে হয়ে গেছে।
সঞ্চালকঃ আমরা কিভাবে বুয়েট গ্রাজুয়েট বা আইবিএ গ্রাজুয়েটদেরকে Entrepreneur হতে উৎসাহিত করতে পারি?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ প্রথমত সবাইকে যে entrepreneur হতে হবে ব্যাপারটা এমন না। সবার রেস্পন্সিবিলিটি ক্রাইসিস একরকম না। তারপরেও যারা entrepreneur হতে চায় তাদের জন্য আমার মনে হয় সোসাইটির চেঞ্জ হওয়াটা জরুরী। বাকি জিনিসগুলো, access to investment, access to networking, mentorship এসব আস্তে আস্তে হবে। কিন্তু এই মুহুর্তে সোসাইটিতে ফেইল করার ব্যাপারটাকে সহজে নেয় না। সমাজ এইদিক গুলো ইতিবাচকভাবে নিলে আরো অনেকে উৎসাহিত হবে।
সঞ্চালকঃ survivorship bias নামে একটা জিনিস আছে, অনেক মনে করে খুব অল্প মানুষই সফল হয় আর আমরা খালি সফলদের গল্পই শুনি। এই ব্যাপারে আপনি কি বলবেন? কত পার্সেন্ট Entrepreneur আসলে successful হয়?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ (একটু হেসে…) এই স্ট্যাটিস্টিক্স তো আমার জানা নাই। তবে আমার পরিচিত সিনিয়র, জুনিয়র, আত্মীয় স্বজনের মধ্যেও ফেইল করা মানুষের সংখ্যাই বেশি। ঐযে Calculated risk এর কথা বললাম, তারপরে যদি কেউ ফেইল করে তাহলে Its okay। কিন্তু কিছু চিন্তা ভাবনা না করে কোম্পানী শুরু করে দিলাম, সেটা আমার মনে হয় উচিত না। Anyway, আমার মনে হয় আমরা আস্তে আস্তে ফেইলিয়র নিয়েও কথা বলব। But, yes! People only talk about success.
সঞ্চালকঃ শেষ প্রশ্ন ভাইয়া, সিনিয়র হিসাবে, এখন যারা স্টার্ট-আপ দিবে বা মাত্র দিয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে আপনি কি পরামর্শ দিবেন?
হাবিব উল্লাহ বাহারঃ আমার মনে হয়, If you are thinking about doing it, তাহলে শুরু করে দেয়া উচিৎ। একটা কথা আছে, Start early, fail early. যত তাড়াতাড়ি আমি শুরু করব, তত পিভট করার সুযোগ পাবো। অন্যদিকে ২-৩ বছর চাকরি করলাম, বিয়ে করলাম, এরপর risk taking ability proportionately কমতে থাকে। কিন্তু যারা মাত্র পাশ করেছে তাদের উপর মানুষজনের expectation ও কম থাকে। তাই যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায়, ফেইল করে রিস্টার্ট করারও তত সুযোগ থাকে। Start early, that would be my suggestion.